বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে
বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা হল বিসিএস পরীক্ষা। চাকরির ক্ষেত্রে বিসিএস নিয়ে সবার প্রত্যাশা আর চাহিদা তুঙ্গে। সবাই চাকরি হিসেবে বিসিএসকেই সবার আগে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তাই এই পরীক্ষা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্তুতি নিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। আগামী ২৯ অক্টোবর ৪৩ তম বিসিএস পরীক্ষা। পরীক্ষা অতি সন্নিকটে সেজন্য বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে আজকের আমাদের এই পোস্ট।
আরো পড়ুন- ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারী পরীক্ষার সিলেবাস
৪৩ তম বিসিএস পরীক্ষার আবেদন শেষ হয়েছে। চার লক্ষাধিক চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেছেন। সামনে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। বিসিএসের শেষ সময়ে প্রস্তুতি শুরু করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। শুরু থেকে গুছানো প্রস্তুতি নিলে সফলতা ধরা দেয়। নিয়ম করে প্রতিটি বিষয়ে সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হয়। দীর্ঘ অধ্যাবসায়ের পর ধরা দেয় সফলতা। সেজন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে টেবিল-চেয়ারে অনেকেই সময় ব্যয় করছেন।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সফল হতে আপনাকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করতে হবে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো এনালাইসিস করে করে। কম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো একবার পড়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো বারবার পড়া উত্তম। কম সময়ে বেশি নম্বর নিশ্চিত করতে এটি অনেক ফলপ্রসূ কৌশল।
এখানে আপনাদের সামনে তুলে ধরব বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে। নিচের নিয়ম মেনে পড়াশোনা করলে আশা করা যায় এগুলো শেষ সময়ের প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হবে।
বিসিএস প্রিলিমিনারি শেষ সময়ের প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে
বাংলা ব্যাকরণ ও সাহিত্য : বাংলা ব্যাকরণ অংশের ধ্বনি, শব্দ, প্রত্যয়, সমাস, বানান ও বাক্য শুদ্ধি ইত্যাদি এবং বাংলা সাহিত্যের চর্যাপদ, পুঁথি ও লোকসাহিত্য, পত্রপত্রিকা, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত সাহিত্য ও পিএসসির পুরোনো লিখিত সিলেবাসে বর্ণিত ১১ জন সাহিত্যিক থেকে প্রতি বিসিএসেই কমবেশি প্রশ্ন করা হয়। তাই এ অধ্যায়গুলো অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে পড়লে প্রশ্ন কমনের নিশ্চয়তা বাড়বে।
ইংরেজি ব্যাকরণ ও সাহিত্য : ইংরেজি ব্যাকরণ অংশের Noun, Adverb, Preposition, Perticiple, Number প্রভৃতি অধ্যায় এবং ইংরেজি সাহিত্য অংশের Literary Terms, Quotation এবং William Shakespeare, এই Shaw, T.S. Eliot, Ernest Hemingway, William Wordsworth, W.B. Yeats, S.T. Colleridge, Charles Dickens, Robert Browning প্রমুখ সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্ম থেকে প্রতি বছর নিয়মিত প্রশ্ন করা হয়। সাহিত্যকর্ম সম্পর্কিত তথ্য মনে রাখার জন্য বারবার পড়ার কোনো বিকল্প নেই।
গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা : গণিত বিষয়টি যত চর্চা করবেন তত ভালো নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। এখানে ল.সা.গু ও গ.সা.গু, শতকরা, বীজগাণিতিক সূত্রাবলি, সূচক ও লগারিদম, সমান্তর ও গুণোত্তর ধারা, সেট, সমাবেশ ও সম্ভাব্যতা, রেখা, কোণ ও ত্রিভুজ প্রভৃতি অধ্যায় অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে মানসিক দক্ষতা-এর প্রশ্নগুলো কয়েকদিন টুকটাক প্র্যাকটিস করলেই পূর্ণ নম্বর তোলা সম্ভব। এর জন্য আলাদা করে সময় দেওয়ার তেমন প্রয়োজন পড়ে না। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার যুদ্ধে গণিত ও মানসিক দক্ষতায় পূর্ণ নম্বর আপনাকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখবে।
সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি : সাধারণ বিজ্ঞানের ভৌতবিজ্ঞান থেকে এসিড, ক্ষার ও লবণ, শক্তির উৎস ও ব্যবহার, বিদ্যুৎ, এক্সরে ও তেজস্ক্রিয়তা; জীববিজ্ঞান থেকে কোষ, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া, খাদ্য ও পুষ্টি; আধুনিক বিজ্ঞান থেকে বায়ুমণ্ডল, গ্রিন হাউজ গ্যাস; কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি থেকে কম্পিউটারের পেরিফেরাল ডিভাইস, কম্পিউটারের অঙ্গসংগঠন, নাম্বার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রভৃতি অধ্যায় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। এ টপিকগুলো থেকে সর্বাধিক কমন ও নিশ্চিত নম্বর তোলা সম্ভব।
বাংলাদেশ বিষয়াবলি : এখানে প্রাচীনকালের ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বাংলাদেশের কৃষিজ সম্পদ, বাংলাদেশের জনসংখ্যা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্পর্কিত তথ্য, বাংলাদেশের সংবিধান, বাংলাদেশের জাতীয় অর্জন প্রভৃতি অধ্যায় খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ জ্ঞানে অসাধারণ হওয়ার প্রবণতা এড়িয়ে এখানে আপনাকে কৌশলী প্রস্তুতি নিতে হবে।
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি : ৩৫তম বিসিএসের আগের বিসিএসে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে প্রচুর রিপিট প্রশ্ন হলেও বর্তমানে সাম্প্রতিক ও নতুন প্রশ্ন বেশি করা হচ্ছে। এখানে ভূ-রাজনীতি, বৈশ্বিক ইতিহাস, আন্তর্জাতিক পরিবেশগত ইস্যু, জাতিসংঘ ও এর অঙ্গসংগঠন তুলনামূলকভাবে অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন- বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস ডাউনলোড
ভূগোল ও নৈতিকতা : ভূগোল বিষয়টি অনেকটা বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির সমন্বিত রূপ। এখানে জলবায়ু ও বৈশ্বিক পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও এর ব্যবস্থাপনা অধ্যায়গুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে নৈতিকতা ও সুশাসন থেকে আসা প্রশ্নগুলো ঠান্ডা মাথায় কৌশলে উত্তর দেওয়া প্রয়োজন। এ বিষয় থেকে আসা প্রশ্নগুলোর উত্তরের প্রতিটি অপশনই সঠিক বলে মনে হয়। ফলশ্রুতিতে নতুন প্রার্থীরা নম্বর যোগের আশায় বেশি উত্তর করে প্রায়শ নিগেটিভ মার্কের কবলে পড়ে।