অফিস সহকারী থেকে আশুতোষ পিএইচডি করতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে
সবকিছু ঠিক থাকলে শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের পথে রওনা হবেন আশুতোষ নাথ। অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করেন তিনি। পূর্ণ বৃত্তিসহ আশুতোষ পিএইচডি করতে যাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস বোস্টনে। বিষয় মেডিসিন অ্যান্ড সিনথেটিক অরগানিক কেমিস্ট্রি।
ছোটবেলায় অভাব আর অর্থকষ্ট খুব কাছ থেকে দেখেছেন। স্নাতক হয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে, চট্টগ্রামের হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ থেকে।
মানিকছড়ির রানী নিহার দেবী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিকে জিপিএ-৪.১৯ আর মানিকছড়ি গিড়ী মৈত্রী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৪.৫০ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে পাস করেন।
চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজে রসায়ন বিভাগে স্নাতকে ভর্তি হলেন। তবু খরচ জোটানো কঠিন। শহরের চকবাজারে কম্পিউটারের দোকানে কাজ নেন তিনি।
তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় ২০১৪ সালে অফিস অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরির জন্য আবেদন করেন। ২০১৬ সালে এই চাকরি পেয়ে চলে আসেন ঢাকায়।
স্নাতকে ৩.১৬ সিজিপিএ নিয়ে পাস করেন। ঢাকা কলেজে রসায়নে স্নাতকোত্তর করবেন। ভর্তি হয়ে তিন দিন ক্লাসও করেছিলেন। এই সময় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) রসায়নে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলো। ভাইভা দিয়ে বুয়েটে সুযোগ পেয়ে গেলেন আশুতোষ। ক্যাম্পাসটা অফিসের পাশে হওয়ায় পড়ালেখাতেও সুবিধা হয়েছিল। ৩.০৮ সিজিপিএ নিয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেন তিনি।বুয়েটে পড়ার সময়ই মূলত গবেষণায় তাঁর ঝোঁক তৈরি হয়েছিল। এ সময় আন্তর্জাতিক তিনটি জার্নালে তাঁর গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। আশপাশের সবাইকে তখন দেখছেন বিশ্বের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে। আশুতোষ এবার নিজেকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক করে আবেদন করা শুরু করেন বিশ্বের নানা প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বছরের মার্চের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস বোস্টন তাঁর কাগজপত্র যাচাইবাছাই করে কয়েক দফায় ভার্চ্যুয়াল ভাইভা নিয়ে পিএইচডি গবেষক হিসেবে আবেদন গ্রহণ করে। সেখানে তিনি শিক্ষা সহকারী হিসেবে খণ্ডকালীন চাকরিও পেয়ে গেছেন। আশুতোষ বলেন,‘আমার একাডেমিক রেজাল্ট হয়তো ভালো নয়। কিন্তু জার্নালে প্রকাশিত আমার গবেষণাপত্রগুলো সাহায্য করেছে। বুয়েটে আমার সুপারভাইজার অধ্যাপক মো. ওহাব খান সবচেয়ে বেশি সহায়তা ও সমর্থন দিয়েছেন। তাঁর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
তথ্য সূত্রঃ প্রথম আলো