চাকরির আবেদন করতে পারছে না অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা
করোনার কারণে থমকে আছে শিক্ষা ব্যবস্থা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই স্থবিরতায় চালিয়ে নিচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস হলেও পরীক্ষা হচ্ছে না। সেই সঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা কয়েকটি পরীক্ষা না দিতে পারায় কোনো চাকরির জন্য আবেদন করতে পারছেন না। সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে সেশনজটের শঙ্কা।
আরো পড়ুন- অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
উচ্চ শিক্ষায় সর্বাধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে শেষ বর্ষে ছিল অথবা যারা শেষ বর্ষে পদার্পণ করেছেন তাদের অভিযোগ, তারা শুধুমাত্র কয়েকটি পরীক্ষা বাদ থাকার কারণে, সার্টিফিকেট নিতে পারছে না।
তাদের জুনিয়র ব্যাচদের ঠিকই ক্লাস হচ্ছে, ক্যাম্পাস খুললে পরীক্ষা দিতে পারবে। এর ফলে, সিনিয়র ব্যাচ ও জুনিয়র ব্যাচগুলোর মধ্যে খুব একটা পার্থক্য থাকবে না। পাশাপাশি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে পরীক্ষা না হলেও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হচ্ছে। এর ফলে, বিশাল একটা ব্যবধানের তৈরি হতে পারে। রয়েছে সেশনজটের শঙ্কাও। এই পরিস্থিতিতে এসব শিক্ষার্থীদের হতাশা বেড়েছে কয়েকগুণ। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটছে।
জানা যায়, বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের পাঁচটি পরীক্ষা হয়েছে, বাকি আছে চারটি বিষয়ে। মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের তিনটি করে পরীক্ষা বাকি হয়েছে। সকলের সাক্ষাৎকার ও ব্যবহারিক পরীক্ষা বাকি আছে। সম্প্রতি বিগত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশের দাবিতে এবং ‘অটোপাস’ চেয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনও করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের দাবি একটাই কলেজ বন্ধ হওয়ার আগে চতুর্থ বর্ষের অনুষ্ঠিত ৫টি বিষয়ের পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে বাকি বিষয়ের ইনকোর্স পরীক্ষার নম্বর মূল্যায়ন করে ফল প্রকাশ করা হোক।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্দোলনে মৌখিক ও বিজ্ঞান বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও গড় পদ্ধতি অনুসরণ করে সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছি আমরা। করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অনিশ্চয়তার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট নিরসন ও শিক্ষার্থীদের চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে বিশেষ সুযোগ সৃষ্টির জন্য পরীক্ষা না নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় ফলাফল দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
আরো পড়ুন- পাঁচটি বিষয়ের ফল নিয়ে এ সনদ কোনো কাজে আসবে না: উপাচার্য
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, আপনি হাফওয়েতে এসে যদি আপনি বলেন পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হোক তবে অসম্পূর্ণ পরীক্ষা হবে। এই ফলাফল নিয়ে আপনি না পারবেন বিদেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে। না পারবেন চাকরির জন্য এপ্লাই করতে। কারণ তারা জানবে আপনি সকল কোর্স সম্পন্ন করে আসেন নাই। এটা শিক্ষার্থীদের জন্য হিতে বিপরীত হবে।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একসময় সেশনজট ভয়াবহ ছিল। চার বছরের অনার্স কোর্স সাত বছর লাগতো। কিন্তু এখন তা লাগছে না। করোনা না হলে ২০১৯ সালের পরীক্ষা ২০১৯ সালেই হতো। করোনা পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক হয় তবে এই সমস্যা সমাধানে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা তিন মাসের মধ্যে ফলাফল দেবো। শুধু সনদ দিয়ে কি হবে? যদি মানসম্মত শিক্ষা হয়।