আবারও সেশনজটের ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
করোনার কারণে আবারও সেশনজটের ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে সব বর্ষের অনার্সের শিক্ষার্থীরা অটোপাস চাচ্ছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দাবি মানতে নারাজ। ফলে প্রায় এক বছরের সেশনজটে পড়তে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন- করোনার কারণে পিছিয়ে পড়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯ লাখ শিক্ষার্থী
উচ্চ শিক্ষায় সর্বাধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে শেষ বর্ষে ছিল অথবা যারা শেষ বর্ষে পদার্পণ করেছেন তাদের অভিযোগ, তারা শুধুমাত্র কয়েকটি পরীক্ষা বাদ থাকার কারণে, সার্টিফিকেট নিতে পারছে না। এছাড়াও করোনার কারণে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষে সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে সেশনজটের শঙ্কা।
করোনা মহামারি শুরুর আগে অনার্স চতুর্থ বর্ষের ফাইনালের পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার নেওয়ার পর পুরো শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। অপরদিকে প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না এলে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, মাস দুয়েক ধরে শিক্ষার্থীরা সেশনজট থেকে বাঁচতে অটোপাস চাইছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে পরীক্ষা সম্পন্ন না করে অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে সনদ দেওয়া হবে না। আর প্রথম বর্ষ থেকে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদর পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে—যেসব পরীক্ষা হয়েছে তার ওপর ভিত্তি ফলাফল দিতে হবে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান হচ্ছে—অর্ধেক রাস্তায় এসে যদি বলেন পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হোক, তাহলে অসম্পূর্ণ ফল নিয়ে না পারবেন বিদেশের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে। আর চাকরির জন্য আবেদন করলে চাকরিদাতারা জানবেন আপনারা সব বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে আসেননি। তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য এটা হিতে বিপরীত হবে। যে কারণে তাদের উদ্দেশ্যে বলেছি—ধৈর্য ধরতে। আমরা অল্প সময়ের মধ্যে বাকি পরীক্ষাগুলো নিয়ে ফলাফল ন্যূনতম সময়ের মধ্যে দেবো।
শিক্ষার্থীরা জানান, অনার্স প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল গত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে, অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের অক্টোবর-নভেম্বরে এবং অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে যথাসময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। আর করোনার আগে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার পাঁচ বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনার শুরুর পর অন্য পরীক্ষা হয়নি।
একসময় সেশনজটের শীর্ষে থাকা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে দূর করে সেশনজট। বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সেশনজট কমানোর জন্য ২০১৪ সালে একবার ক্রাশ প্রোগ্রাম নেওয়া হয়। এ কারণে শিক্ষাবর্ষ ১ বছরের স্থলে ৮ মাস হয়েছিল। সেজশজট নিরসনের জন্য দ্রুত ফরম পূরণ, পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশের উদ্যোগের নাম ক্রাশ প্রোগ্রাম। পাঠদান ও শিক্ষাগ্রহণ বড় বিষয় নয়, পরীক্ষা নিয়ে সেশনজট কমানোই ছিল ঐ প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য।
আরো পড়ুন- চাকরির আবেদন করতে পারছে না অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স, মাস্টার্স, প্রফেশনাল কোর্স মিলে প্রায় ২৯ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। দেশের স্নাতক পর্যায়ের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২ হাজার ৩০০ কলেজে পড়ছেন। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সম্মান পড়ানো হয় ৭৯৭ টি কলেজে। ১৫৭ টি কলেজে মাস্টার্স শেষ পর্ব পড়ানো হয়।
আমরা ২০১৬-২০১৭ ডিগ্রিতে যারা আছি আমদের ৩ বর্ষ এখনো শেষ হয়নি। আমরা কি স্টুডেন্ট না। আমাদের কি পরিবার নেই। আমার করনা না তাকার আগেও সেশন জটে ছিলাম। এখন তা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের নিয়ে একটা নিউজ করেন।