আমাদের লক্ষ্য ২০৫০ সালে কারিগরি শিক্ষা ৫০ শতাংশে উন্নীত করা: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা দীপু মনি বলেছেন, উন্নত বিশ্বে কারিগরি শিক্ষায় বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। আমরাও সেদিকে এগুচ্ছি। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব শিক্ষার্থীরা পড়াশােনা করছে তারা ভালাে করছে। ভবিষ্যতে আরও ভালাে করবে। আমাদের লক্ষ্য ২০৫০ সালে কারিগরি শিক্ষা ৫০ শতাংশে উন্নীত করা।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) গাজীপুরে রােভার পল্লীতে বাংলাদেশ স্কাউটস রােভার অঞ্চল আয়ােজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিভা অন্নেষণ ও আন্তঃইউনিট বিতর্ক প্রতিযােগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান- ২০২১ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বাংলাদেশ স্কাউটস রােভার অঞ্চলের সভাপতি প্রফেসর ড. মাে. মশিউর রহমান।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। শিক্ষার্থীদেরকে ভালাে মানুষ, স্বাবলম্বী ও পরােপকারী মানুষ হিসেবে তৈরি হতে হবে। তাদের মধ্যে সহমর্মিতার বােধ তৈরি করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষায় আমরা যা কিছু করছি- আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার কথা বলছি- এসবই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া পথরেখা। সবকিছুই তাঁর শিক্ষা ভাবনায় রয়েছে। আর এটির প্রতিফলন দেখতে পাই ড. খুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনে।
কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “উন্নত বিশ্বে কারিগরি শিক্ষায় বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। আমরাও সেদিকে এগুচ্ছি। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব শিক্ষার্থীরা পড়াশােনা করছে তারা ভালাে করছে। ভবিষ্যতে আরও ভালাে করবে। আমাদের লক্ষ্য ২০৫০ সালে কারিগরি শিক্ষা ৫০ শতাংশে উন্নীত করা।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছেন শিক্ষায় বিনিয়ােগ হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম বিনিয়ােগ। আমাদের যেতে হবে অনেক দূর। আমাদের দেশে বর্তমানে ৫ কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে, যেটি অনেক দেশের মােট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। এই যে শিক্ষার্থী সংখ্যা, এই সংখ্যাটিকে সম্পদে রূপান্তর করাটাই আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। এটিকে ওভারকাম করতে হবে। মানবিক বাংলাদেশ তৈরিতে আমাদের সন্তানরা বড় ভূমিকা পালন করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাে. মশিউর রহমান বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করছি। আমাদের অনেকটা পথ বাকি আছে। কারণ অনেক পথ হেঁটেছি অগণতান্ত্রিকভাবে। জাতির পিতাকে হত্যার পর সেই অগণতান্ত্রিক পথ আমাদের সকল উন্নয়নের পথ রূদ্ধ করে দিয়েছিল। আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় এগুচ্ছে।
তিনি বলেছেন, “মানুষ চিরকাল বাঁচে না। যে উন্নয়নের ধারায় রেখে গেলাম সেটি ধরে রেখাে।” আমি বিশ্বাস করি তােমাদের নতুন প্রজন্মের হাত ধরে একশত বছরের বাংলাদেশ একটি পূর্ণতার বাংলাদেশ হবে। একশত বছরের বাংলাদেশ শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমৃদ্ধ হবে না, মানবিক বাংলাদেশও হবে।
রােভার স্কাউটদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, ‘তােমরা যতাে বেশি উদার হতে শিখবে, দেখবে তােমাদের নিজের জীবন পূর্ণতায় ভরে গেছে। যতাে বেশি উদারভাবে অন্যকে দিতে পারবে, তার মধ্যে যে প্রাপ্তি আছে সেটি তােমার জীবনকে পূর্ণতা দেবে। স্কাউটস আন্দোলনের মধ্যদিয়ে অহর্নিশ সেবা, অন্যকে ভালােবাসা- এসবে নিজেকে উজার করে দেবে। সেটিই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সমতাভিত্তিক সমাজ এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মূল অনুপ্রেরণা।
অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বাংলাদেশ স্কাউটস রােভার অঞ্চলের সভাপতি প্রফেসর ড. মাে. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান স্কাউট ব্যক্তিত্ব ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ড. মাে. মােজাম্মেল হক খান, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাে. গিয়াসউদ্দীন মিয়া, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মােল্লা মাহফুজ আল- হােসেন প্রমুখ।