চাকরির প্রস্ততিবিসিএস

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি – বাংলাদেশ বিষয়াবলী

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি – বাংলাদেশ বিষয়াবলী । বাংলাদেশ বিষয়াবলী পড়া শুরু করার আগে আপনাকে নবম-দশম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ের এমন কিছু টপিক শিখে নিতে হবে যেগুলো প্রিলিমিনারি পরীক্ষা, লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভা- সব ক্ষেত্রেই কাজে লাগবে। আমি আজকে দেশ বিভাগ ও ভাষা আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করব। এর পরের পর্বে তার পর থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত আলোচনা করব। এই টপিকগুলো প্রিলির পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষায়ও কাজে লাগবে।

দেশ বিভাগ 

বড়লাট ওয়েভেল মুসলিম লীগ ও কংগ্রেস দলকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যোগদানে আহ্বান জানান। কংগ্রেস এর নবনির্বাচিত সভাপতি নেহেরু মুসলিম লীগের স্বার্থবিরোধী বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম লীগ সরকারে যোগদানের পূর্ব সিদ্ধান্ত বাতিল করে। কিন্তু, বড়লাটের আহ্বানে নেহেরু সরকার গঠনে উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর প্রতিবাদে মুসলিম লীগ ১৬ আগষ্ট ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ ঘোষণা করে। এই দিন ভয়াবহ দাঙ্গায় হাজার হাজার নিরীহ মানুষ নিহত হয়। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং হিন্দু মুসলমান সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি ঘটলে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ঘোষণা করেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাটলি ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি মাসে ঘোষণা করেন যে ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসের পূর্বে ভারতীয়দের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। ক্ষমতা হস্তান্তরের দায়িত্ব পালনের জন্য লর্ড ওয়াভেল স্থলে লর্ড মাউন্টব্যটেনকে ভারতের বড়লাট হিসেবে পাঠানো হয়। লর্ড মাউন্টব্যাটেন কংরেস ও মুসলিম নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ভারত বিভক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা থেকে দেশরক্ষার জন্য শেষ পর্যন্ত নেতৃবৃন্দ দেশবিভাগে সম্মত হতে বাধ্য হন। ৩রা জুন মাউন্টব্যাটেন সুস্পষ্টভাবেই ভারত বিভাগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। তিনি এও ঘোষণা করেন যে, ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের পূর্বে ভারতীয়দের হাতে ক্ষপমতা অর্পণ করা হবে। অপরদিকে পাকিস্তান দাবি মেনে নেয়ায় মুসলিম লীগ সন্তোষ প্রকাশ করে।

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ১৫ জুলাই লন্ডনে কমন্স সভার এক ঘোষণায় ভারত-পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন ডোমিনিয়ন প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়। দুই দেশের সীমানা নির্ধারণের জন্য স্যার র‍্যাডক্লিফের নেতৃত্বে সীমানা নির্ধারণ কমিটি গঠন করা হয়। ৯ আগষ্ট র‍্যাডক্লিফ তার সীমান্ত রোয়েদাদ সমাপ্ত করে তা ভাইসরয়ের কাছে জমা দেন, যা রহস্যজনক কারণে আলোর মুখ দেখেনি। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ১৮ জুলাই ভারত স্বাধীনতা আইন প্রণয়ন করা হয়, যার ভিত্তিতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ১৪ আগষ্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগষ্ট ভারত নামে দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

ভাষা আন্দোলনের পটভূমি

তমদ্দুন মজলিস

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ আগষ্ট ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি হলো। তৎকালীন পূর্ব বঙ্গ পাকিস্তানের একটি অংশে পরিণত হলো। পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা, সংস্কৃতি কোনো কিছুরই মিল নেই। প্রায় এক হাজার মাইল ব্যবধানের পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) দুটি ভূখন্ডকে এক করা হলো শুধু ধর্মের ভিত্তিতে। ফলে পাকিস্তান নামক একটি নতুন রাষ্ট্রের শাসকগোষ্ঠী প্রথমেই বাঙ্গালিকে শোষণ করার কৌশল হিসেবে বাংলা ভাষার ওপর আঘাত হানল। সে সময় মুসলিম লীগের প্রভাবশালী নেতা ও কিছু বুদ্ধিজীবীরা পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হলে উর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা- এ মর্মে মতামত দেন। তখনই ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহসহ বাংলার বুদ্ধিজীবী, লেখকগণ এর প্রতিবাদ করে। পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হওয়ার পর পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে তমদ্দুন মজলিশ গঠিত হয়। এইটি ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রথম সংগঠনের উদ্যোগে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর ভাষা আন্দোলনের প্রথম পুস্তিকা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু প্রকাশিত হয়। পুস্তিকাটিতে রাষ্ট্রভাষা বাংলা দাবির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।

রাষ্ট্র ভাষা সংগ্রাম পরিষদ

তমুদ্দিন মজলিসের উদ্যোগে ভাষা আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপদানের জন্য ৪৭-এর অক্টোবর মাসে গঠিত হয় প্রথম ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ যার আহ্বায়ক মনোনীত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নূরুল হক ভুঁইয়া। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের পাশাপাশি পাকিস্তান গণতান্ত্রিক যুবলীগ, পূর্ব বঙ্গ বুদ্ধিজীবী সমাজ, সাংবাদিক সংঘ বিভিন্ন সভা-সমিতিতে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান। এসব কিছুকে উপেক্ষা করে ডিসেম্বর মাসে করাচিতে অনুষ্ঠিত শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য সংবিধান সভার কাছে সুপারিশ করে। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম থেকেই শিক্ষিত বাঙালি সমাজ বাংলা ভাষার দাবি নিয়ে সোচ্চার হয়ে উঠে। এ সময় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের এক সভায় নিম্নশ্রেণী থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলাকে গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে ইংরেজির পাশাপাশি উর্দুতে কার্যক্রম শুরু হলে পূর্ব বাংলা কংগ্রেস পার্টির সদস্য কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এর প্রতিবাদ করেন এবং বাংলাকেও অধিবেশনের অন্যতম ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। কিন্তু, এ দাবি প্রত্যাখান করা হয়। এ ঘটনায় পূর্ব বাংলার ছাত্রসমাজ ব্যাপকভাবে প্রতিবাদ করতে থাকে। ২৬ ও ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হয়। ২ মার্চ দেশের ছাত্রসমাজ বুদ্ধিজীবিদের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় বারের মত ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে। এবার আহ্বায়ক মনোনীত হন শামসুল আলম।

রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের প্রতিবাদ

রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নতুন কমিটির আহ্বানে ১১ মার্চ ধর্মঘট পালিত হয়। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা এবং পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা এবং পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ধর্মঘটের সঙ্গে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগানসহ মিছিল করার সময় পুলিশের লাঠিচার্জে অনেকে আহত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুল হক, অলি আহাদ, কাজী গোলাম মাহবুবসহ অনেকেই গ্রেফতার হন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৩-১৫ মার্চ আবার ধর্মঘট পালিত হয়। এবার শুধু ঢাকা নয়, দেশের সর্বত্র ধর্মঘট পালিত হয়। তীব্র আন্দোলনের মুখে ১৫ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ চুক্তিতে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি, তদন্ত কমিটি গঠন, শিক্ষার মাধ্যম বাংলা, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি প্রস্তাব আইন পরিষদে উত্থাপন প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

জিন্নাহর ভাষণ ও ছাত্রদের প্রতিবাদ

১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মার্চ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় আসেন। ২১ মার্চ রমনার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এবং ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দেন। দুটি বক্তব্যেই তিনি বাংলা ভাষার সাবি অগ্রাহ্য করে উর্দুকে পাকিস্তানের রষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেন। সমাবর্তন অনুইষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘উর্দু এবং একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রষ্ট্রভাষা’। উপস্থিত ছত্ররা তীব্র প্রতিবাদ ‘না না‘ ধ্বনি দিয়ে ওঠে। এ সময়ে সারা পুর্ব পাকিস্তানের ভাষা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ১৮ নভেম্বর প্রধানমনন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ঢাকায় এসে বক্তৃতাকালে আবার উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেন। ছাত্ররা ‘না না’ বলে প্রতিবাদ করে উঠে।

ভাষা আন্দোলনে নতুন মাত্রা

১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে করাচিতে অনুষ্ঠিত নিখিল পাকিস্তান শিক্ষা সম্মেলন বাংলা ভাষা আরবি হরফে লেখার প্রস্তাব দেওয়া হয়। দ. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর প্রতিবাদ করেন। আরবি হরফে বাংলা লেখার ষড়যন্ত্রের প্রচেষ্টা হিসেবে বাংলা ভাষা সংস্কারের নামে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে ‘পূর্ব বাংলা ভাষা কমিটি’ গঠন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রতিবাদ জানায়। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ১১ মার্চ আব্দুল মতিনকে আহবায়ক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে গণপরিষদ কর্তৃক গঠিত মূলনীতি কমিটির সুপারিশে বলা হয়, উর্দুই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে। দেশজুড়ে প্রতিবাদ সভা-সমাবেশ চলতে থাকে। ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান আততায়ীর হাতে নিহত হলে প্রধানমন্ত্রী হন খাজা নাজিমুদ্দিন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় খাজা নাজিমুদ্দিনের বক্তব্যে জিন্নাহর কথার প্রতিধ্বনি হলে ভাষা আন্দোলন নতুন মাত্রা ও সর্বাত্নক রূপ লাভ করে। এভাবে চূড়ান্ত পর্যায়ের সূচনা হয়।

ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়

নতুন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ২৭ জানুয়ারি পল্টন মউদানে ঘোষণা দেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্র হবে উর্দু। এর প্রতিবাদে ভাষা আন্দোলন নতুন করে শুরু হয়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ৩০ জানুয়ারি সভা ও ছাত্র ধর্মঘটের আহ্বান করে। ৩১ আজনুয়ারি আওয়মী মুসলিম লীগ সভাপতি মাওলানা হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সর্বদলীয় সভায় ‘সর্বদলিয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রামে পরিষদ’ গঠিত হয়। এর আহ্বায়ক ছিলেন কাজী গোলাম মাহবুব। এ সভায় ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী হরতাল, জনসভা ও বিক্ষোভ মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসময় হঠাৎ করে পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী নূরুল আমিন ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে সব ধরনের সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল নিষিদ্ধ করেন। সরকারি এ ঘোষণা পওয়া মাত্রই ঢাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্ররা কিছুতেই ১৪৪ ধারা মেনে নিতে পারেনি।

২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আওয়ামী মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের বৈঠক বসে। আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে এ সভায় ১৪৪ ধারা অমান্য করার সিদ্ধান্তে দ্বিমত দেখা দেয়। অনেক সদস্য প্রথমে ১৪৪ ধারা অমান্য করার পক্ষে ছিলেন না। কিন্তু, আব্দুল মতিন, গুলি আহাদ, গোলাম মাহবুব প্রমুখ নেতারা ১৪৪ ধারা অমান্য করার সিদ্ধান্তে অটুট থাকেন। অবশেষে ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় (বর্তমান ঢাকা মেডিকেল কলেজের চত্বরে) ছাত্রদের সভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ঢাকা শহরের স্কুল-কলেজের হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী সমাবেশে যোগ দেন। কতিপয় নেতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার জন্য ছাত্রদের অনুরোধ করে। তবে ছাত্র নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্তে অটল থাকে। সভায় ছোট ছোট দলে ছাত্ররা মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত নেন। ছাত্র-ছাত্রীরা ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগান দিয়ে মিছিল করতে থাকলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে।

পুলিশের গুলিতে আবুল বরকত, রফিক উদ্দিন আহমদ, আব্দুল জব্বার ঘটনাস্থলে শহীদ হন। আব্দুস সালাম ঐদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ৭ এপ্রিল শহীদ হন। সে সময় গণপরিষদের অধিবেশন চলছিল। গুলির খবর পেয়ে আবদুর রশীদ তর্কবাগীশসহ আইন পরিষদের কয়েকজন সদস্য অধিবেশন ত্যাগ করেন। বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি গণবিক্ষোভ শুরু হয়। জনতা শহীদদের জন্য শোক মিছিল বের করে। আবারও মিছিলের লাঠি, গুলি ও বেয়োনেট ব্যবহার করে। এতে শফিউর রহমানসহ আরও কয়েকজন শহীদ হন। অনেকে গ্রেফতার হন। ছাত্ররা যে স্থানে গুলিতে নিহত হয় সেখানে ছাত্ররা সারারাত জেগে ২৩ ফেব্রুয়ারিতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ বা শহীদ্মিনার নির্মাণ করে। পরে পুলিশ শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে দেয়। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে অস্থায়ি শহীদ মিনারের স্থলে শিল্পী হামিদুর রহমানের নকশা ও পরিকল্পনায় শহীদ মিনার নির্মাণ কর হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনি শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে দিলে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে সে নকশা অনুযায়ী বর্তমান শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। তারপরেও ভাষা আন্দোলন অব্যাহত ছিল। প্রধান আন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। জাতীয় পরিষদে বাংলা ভাষা বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের একপর্যায়ে এর সদস্য আদেলউদ্দিন আহমেদের দেওয়া সংশোধনী প্রস্তাব অনুযায়ী উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকেও অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়।

It is during our darkest moments that we must focus to see the light. — Aristotle

বি দ্রঃ লেখাটাতে শুধু আমার নিজের আইডিয়া অনুযায়ী ধারণা দেয়া হয়েছে। আপনি আপনার মত করেও প্রস্তুতি নিতে পারেন। সফল হবার জন্য যে প্রস্তুতি দরকার, সেটা সম্পন্ন করাটাই মুখ্য কাজ।আর ছোটখাটো বা অনিচ্ছাকৃত ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন দয়া করে।

অভিজিৎ বসাক Avizit Basak

বিসিএস(প্রশাসন)

৩৩তম বিসিএস

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply