ক্যারিয়ারচাকরির প্রস্ততি

সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা জেলা সদরে হবে

সরকারি  প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা জেলা সদরে হবে । সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা জেলায় জেলায়ই হচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা না জেলায় জেলায় পরীক্ষা হবে সে প্রশ্নের উত্তর এসেছে। প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে হচ্ছে না। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার নিয়োগ পরীক্ষা ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

 

বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, খাগড়াছড়ি পরিষদে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আগামী ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে।

 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে গঠিত বাছাই ও নিয়োগ কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ৮ এপ্রিল (শুক্রবার) দুপুর আড়াইটায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ৫টি কেন্দ্রে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

 

কেন্দ্রগুলো হলো খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ, খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নতুন কুঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট হাই স্কুল এবং টিউফা আইডিয়াল স্কুল। বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারও অনুরোধ জানানো হয়।

 

এদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী মাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হতে পারে। জুলাইয়ের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সিদ্ধান্তে রীতিমতো ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা। ক্ষণে ক্ষণে এই পরীক্ষার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হচ্ছে। এত পরিবর্তনের ফলে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে কর্মরতদের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফলে বিভ্রান্তিতে পড়েছে লাখ লাখ পরীক্ষার্থী।

 

এই পরীক্ষা নিয়ে রোববার অধিদপ্তর সারাদেশের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে ভার্চ্যূয়াল সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেয়া হবে না। কিন্তু এ নিয়ে কোনো কর্মকর্তা স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না। তবে অধিদপ্তরের কর্মচারীরা এই সভার সূত্র দিয়ে ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন, শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে নয়, আগের মত জেলায় জেলায় নেয়া হবে। তবে কত তারিখ থেকে এই পরীক্ষা নেয়া হবে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মুখ বন্ধ। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে জানা গেছে।

 

রোববার রাতে একটি উপজেলার এক রিসোর্স সেন্টারের (ইউআরসি) ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দিয়ে লিখেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল হয়েছে। খুব শিগগিরই জেলা পর্যায়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’

 

ওই ষ্ট্যাটাসে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের রবিবারের ভার্চ্যূয়াল সভাকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করেন।

 

মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি সভা হবে। তখনই চূড়ান্ত হবে।

 

ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলেয়া ফেরদৌসী শিখা বলেন, অধিদপ্তরের উদ্যোগে সভায় কেন্দ্রীয়ভাবে না নিয়ে জেলায় জেলায় পরীক্ষা হওয়ার কথা হয়েছে। লিখিতভাবে এখনো নির্দেশনা পাইনি।

 

রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, জেলায় জেলায় পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হলেও বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন চাওয়া হতে পারে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে এরআগে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নেয়া হত কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, আগে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নেয়া হত না। মন্ত্রণালয়ই অনুমোদন দিত। কিন্তু এবার বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির বিষয়টি সামনে চলে এসেছে।

 

চট্টগ্রামের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে এত কথা হয়েছে যে নতুন করে লিখিত নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত কিছুই বলতে চাই না।

 

এরআগে গত ১০ মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জুলাই মাসে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়া হবে।

দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে থাকলে চলতি বছরের মধ্যেই প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করতে চায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। জাতীয় পরামর্শক কমিটির মতামত নিয়ে ধাপে ধাপে নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট মাধ্যমে জানা গেছে।

ডিপিই থেকে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৭ মাস পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল হওয়ায় প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এই নিয়োগের আবেদন কার্যক্রম শেষে তা যাচাই-বাছাই কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে প্রশ্নপত্র তৈরি, ওএমআর (উত্তরপত্র) তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের বড় নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হলে ডিপিইও শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করতে চায়।

এ বিষয়ে জানতে ডিপিইর মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুর আলম বলেন, করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। এই নিয়োগের জন্য ১৩ লাখের বেশি প্রার্থী আবেদন করেছেন। পরীক্ষা আয়োজনে আমরা প্রস্তুত আছি, করোনা সংক্রমণ আর বৃদ্ধি না পেলে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আগামী  বছরের জুন ২০২২ ইং মাসে হবে শুরু করতে চাই।

তিনি বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, সরকারি কর্ম কমিশনের নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে আমরাও নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করতে চাই। চলতি অর্থবছরের মধ্যে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। বর্তমানে ওএমআর সিট প্রস্তুতের কাজ চলছে। জাতীয় পরামর্শক কমিটির মতামত নিয়ে ধাপে ধাপে নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করা যায় কি-না সেটি নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে এই নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থাতেও নিয়োগ সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কাজ এগিয়ে রাখা হয়েছে। পরীক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সঙ্গে চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে।

উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে ১৩ লাখ ৫ হাজারের বেশি আবেদন জমা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সারাদেশে ৩২ হাজারের বেশি সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেবে সরকার। যার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়োগ পাবেন ২৫ হাজার ৬৩০ জন। বাকিগুলো শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়া হবে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply