৬ দফা গুলো কি কি?
৬ দফা গুলো কি কি? ঐতিহাসিক ৬ দফা গুলি নিম্নে দেয়া হলোঃ-
প্রথম দফা : শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি: ১৯৪০ সালের ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সরকারের বৈশিষ্ট্য হবে ফেডারেল বা যুক্তরাষ্ট্রীয় ও সংসদীয় পদ্ধতির; তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচন হবে প্রত্যক্ষ এবং সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে। প্রদেশগুলোকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার প্রতিনিধি নির্বাচন জনসংখ্যার ভিত্তিতে হবে।
দ্বিতীয় দফা : কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা: কেন্দ্রীয় বা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের দায়িত্ব থাকবে কেবল প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয়ে সীমাবদ্ধ।অবশিষ্ট সকল বিষয়ে অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
তৃতীয় দফা : মুদ্রা ও অর্থ বিষয়ক ক্ষমতা: পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য দুটি পৃথক মুদ্রা-ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যা পারস্পরিকভাবে কিংবা অবাধে উভয় অঞ্চলে বিনিময়যোগ্য। এ ক্ষেত্রে দুই অঞ্চলে স্বতন্ত্র বা পৃথক পৃথক স্টেট ব্যাংক থাকবে এবং মুদ্রার পরিচালনা ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। তাতে এমন বিধান থাকতে হবে যেন এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে সম্পদ হস্তান্তর কিংবা মূলধন পাচার হতে না পারে। বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্থান থেকে পশ্চিম পাকিস্থানে মূলধন পাচার বন্ধ করার জন্য সংবিধানে কার্যকর ব্যবস্থা থাকতে হবে।
চতুর্থ দফা : রাজস্ব কর ও শুল্ক বিষয়ক ক্ষমতা: সকল প্রকার রাজস্ব ধার্য ও আদায়ের ক্ষমতা থাকবে অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে। কেন্দ্রীয় তথা প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয়ের ব্যয় নির্বাহের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রয়োজনীয় রাজস্বের জোগান আঞ্চলিক তহবিল হতে সরবরাহ করা হবে। সংবিধানে নির্দেশিত বিধানের বলে রাজস্বের এই নির্ধারিত অংশ স্বাভাবিকভাবেই ফেডারেল তহবিলে জমা হয়ে যাবে। এহেন সাংবিধানিক বিধানে এমন নিশ্চয়তা থাকবে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্বের প্রয়োজন মেটানোর ব্যাপারটি এমন একটি লক্ষ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ হতে হবে যেন রাজস্বনীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নিশ্চিতভাবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকে।
পঞ্চম দফা : বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা: পঞ্চম দফায় বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ে নিম্নরূপ সাংবিধানিক বিধানের সুপারিশ করা হয়: (ক) ফেডারেশনভুক্ত প্রত্যেকটি অঙ্গরাজ্যের বহির্বাণিজ্যের পৃথক পৃথক হিসাব রক্ষা করতে হবে। (খ) বহির্বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অঙ্গরাজ্যগুলোর এখতিয়ারে থাকবে এবং অঙ্গরাজ্যের প্রয়োজন অঙ্গরাজ্য কর্তৃক ব্যবহৃত হবে। (গ) কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা সমান হারে অথবা সর্বসম্মতনির্দিষ্ট হারে অঙ্গরাজ্যগুলো মিটাবে। (ঘ) অঙ্গরাজ্যের মধ্যে দেশজ দ্রব্য চলাচলের ক্ষেত্রে শুল্ক বা করজাতীয় কোনো বাধা থাকবে না। (ঙ) সংবিধানে অঙ্গরাজ্যগুলোকে বিদেশে নিজ নিজ বাণিজ্য প্রতিনিধি দল প্রেরণের এবং স্ব স্ব স্বার্থে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের ক্ষমতা দিতে হবে।
ষষ্ঠ দফা : আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা: (ক) আঞ্চলিক সংহতি ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সংবিধানে অঙ্গরাজ্যগুলোকে স্বীয় কর্তৃত্বাধীনে আধা-সামরিক বাহিনী বা আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা দিতে হবে। (খ) কেন্দ্রীয় সরকারের সকল শাখায় বা চাকরি ক্ষেত্রে প্রতিটি ইউনিট থেকে জনসংখ্যার ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ করতে হবে। (গ) নৌ-বাহিনীর সদর দপ্তর করাচি থেকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন করোনার কারণে যেহেতু এ বছর পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব হচ্ছে না অটোপ্রমোশন দিয়ে শিক্ষার্থীদের পরের শ্রেণির পড়াশোনার শুরুর ব্যবস্থা নিতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে পড়াশোনায় আরো মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান সরকার প্রধান। সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স কিশোরগঞ্জের মিঠামইন অষ্টগ্রাম অলওয়েদার সড়ক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
মহামারি করোনাভাইরাসে আমাদের যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটা শুধু বাংলাদেশের না, আজ বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি স্থবির। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে আমাদের ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছেনা, ছেলেমেয়েরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। তাদের পড়াশোনার ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তারপরও আমরা তাদের পড়ালেখাটা যাতে চলামান থাকে সেজন্য নানান উদ্যোগ নিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, মহামারির কারণে আমরা এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পারছিনা। তাই তাদের টেস্ট কিংবা ক্লাসের পরীক্ষাগুলো নিয়ে ফল দিতে ইতোমধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের প্রমোশনটা দিয়ে দেয়া হবে যাতে তারা পড়াশোনাটা অব্যাহত রাখতে পারে। পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে অনলাইন ও সংসদ টিভির মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে বলেও এসময় জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, সংসদ টিভির মাধ্যমে ছেলেমেয়েরা সময়মতো তাদের ক্লাস দেখতে পারে। সেখান থেকে তারা শিক্ষা নিতে পারে। সাথে সাথে যারা তাদের অভিভাবক রয়েছে তাদেরও বলবো যে আজকে যেহেতু ডিজিটাল বাংলাদেশ, সারা বাংলাদেশে নেটওয়ার্ক আছে। আবার ডিজিটাল সেন্টার আমরা করে দিয়েছি যাতে সেখানে গিয়েও শিখতে পারে। আমরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমও করে দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষার প্রসার ঘটানোর সংসদ টিভিতে ক্লাস প্রচার করা হচ্ছে। এটি সারাদেশে দেখার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে এটিকে শিক্ষার জন্য দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকেও আমদের ছেলেমেয়েরা যথাযথ দেখে শিক্ষা নেবেন বলে আশা করছি। আর তাদের শিক্ষকরাও এ বিষয়ে গাইডলাইন দিতে পারেন। যাতে তাদের পড়াশোনাটা অব্যাহত থাকে। আর সেই সাথে তাদের খেলাধুলার দিকেও নজর দিতে হবে।