সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিউশন ফি গ্রহণে মাউশির নির্দেশনা
সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিউশন ফি গ্রহণে নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের টিউশন ফি গ্রহণ না করার নির্দেশ দিয়েছে মাউশি।
মাউশির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে সারাদেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে টিফিন, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার ও ম্যাগাজিন ফি এবং বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে টিফিন, পুন:ভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন, উন্নয়ন ফি গ্রহণ না করার নির্দেশনা ছিল।
২০২২ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত টিউশন ফি ও বাৎসরিক সেশন চার্জ গ্রহণ করতে পারবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলমান কোডিড-১৯ পরিস্থিতিতে গত ১৮.০৩,২০২০ খ্রি., থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। তবে ইতােমধ্যে “সংসদ বাংলাদেশ টেলিডিশনে প্রচারিত ক্লাসের পাশাপাশি বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কার্যকরভাবে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করলেও, কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তা ভালােভাবে করতে পারেনি।
একইভাবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এসব অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পেরেছে, কিছু শিক্ষার্থী পারেনি। সার্বিক বিবেচনায় আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলাে হঠাৎ করে উদ্ভুত এই পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার।
তবে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়ে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অভিভাবকদের মতদ্বৈততা পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিছু অভিভাবক বলছেন একদিকে স্কুল বন্ধ ছিল আর অন্যদিকে এই করােনা পীড়িত সময়ে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন, অতএব তাদের পক্ষে টিউশন ফি প্রদান করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলাে বলছে তারা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে; উপরন্তু, প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অত্যাবশ্যকীয় খাত ও স্কুল রক্ষণাবেক্ষণ খাতে প্রতি মাসে তাদের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতেই হয়।
এমতাবস্থায়, আমাদেরকে যেমন অভিভাবকদের অসুবিধার কথা ভাবতে হবে অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলাে যেন বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে না যায় সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহে বছরের শুরুতে এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রযােজ্য ক্ষেত্রে টিউশন ফিসহ বিভিন্ন খাতে অর্থ আদায় করত: ভর্তি কাযক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে আদায়কৃত সব খাতের অর্থ ব্যয় হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পূর্বাপর বিষয়গুলাে বিবেচনা করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফিসহ অত্যাবশ্যকীয় বেসরকারি কর্মচারী এবং কম্পিউটার (আইসিটি) বাবদ ফি গ্রহণ করতে পারবে কিন্তু এ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার ও ম্যাগাজিন বাবদ কোনাে ফি গ্রহণ করবে না বা করা হলে তা ফেরত দেবে।
সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিউশন ফি গ্রহণে মাউশির নির্দেশনা
এছাড়াও অন্য কোনাে ফি যদি অব্যয়িত থাকে তা একইভাবে ফেরত দেবে। তবে যদি কোন অভিভাবক চরম আর্থিক সংকটেপতিত হন, তাহলে বিষয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনায় নেবেন। এখানে উল্লেখ্য, কোনাে শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন যেন কোনাে কারণে ব্যাহত না হয় সে বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে যন্ত্রশীল হতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের শুরুতে যদি কোডিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলাে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমন কোনাে ফি যেমন টিফিন, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন গ্রহণ করবে না যা ঐ নির্দিষ্ট খাতে শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যয় করতে পারবে না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় পূর্বের ন্যায় সকল ধরণের যৌক্তিক ফি গ্রহণ করা যাবে।