পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতি শুরু
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষা হবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। ইতোমধ্যে পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। পরীক্ষার্থীদের জন্য ৩ মাসে শেষ করার মত একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়েও পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার জন্য নতুন কেন্দ্র স্থাপন ও কেন্দ্র পরির্বতনের আবেদন চাওয়া হয়েছে স্কুলগুলোর কাছে।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়। এদিকে গতকাল ঢাকা বোর্ড থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে নতুন কেন্দ্র স্থাপনের আবেদন চেয়েছে ঢাকা বোর্ড।
জানা গেছে, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ক্যাম্পাস রয়েছে, শুধুমাত্র সেসব প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রের জন্য আবেদন করতে আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষার নতুন কেন্দ্র স্থাপন ও কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন করা যাবে। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার জন্য নতুন কেন্দ্র স্থাপন এবং কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন করতে হবে। এ আবেদন প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্যাডে করতে হবে।
তবে যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাড়া বাড়িতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে, তাদের নতুন কেন্দ্রের জন্য আবেদন করার প্রয়োজন নেই। নতুন কেন্দ্রের জন্য আবেদন বাবদ ৩ হাজার টাকা (অফেরতযোগ্য) এবং কেন্দ্র পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা (অফেরতযোগ্য) ফি সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। ফি জমা দেয়ার রশিদ আদেনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে নতুন কেন্দ্র অথবা কেন্দ্র পরিবর্তনের নির্ধারিত ছক ডাউনলোড করে পূরণকৃত ছক আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। প্রস্তাবিত কেন্দ্রটি বোর্ডের অনুমোদন পেলে পার্শ্ববর্তী যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই কেন্দ্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক, সে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিজস্ব প্যাডে সুস্পষ্ট ঘোষণাসহ সম্মতিপত্রের মূলকপি আবেদনপত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ের পর আবেদন করা যাবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর পাঠাতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, এসএসসির প্রতিটি বিষয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ অধ্যায় নির্বাচন করে সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। এবার সিলেবাস এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে একজন শিক্ষার্থী ন্যূনতম পড়ালেখা করলেই তার পক্ষে পাস করা সম্ভব।
এসএসসি পরীক্ষায় বাংলা প্রথম পত্রে মোট সাতটি প্রশ্নের উত্তর করতে হয়। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মোট ৯টি পদ্য, উপন্যাস ও নাটক দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পত্রে দেয়া হয়েছে ছয়টি অধ্যায়। ইংরেজি প্রথম পত্রে আটটি অধ্যায় ও দ্বিতীয় পত্রের সিলেবাসও খুবই সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। ইংরেজি বিষয়ে প্রশ্নের কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ইংরেজির গ্রামার অংশের ন্যারেশন, বাক্য গঠনসহ বেশ কিছু অংশ বাদ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইংরেজিতে রচনাও লিখতে হবে না। ছোট হওয়া সিলেবাসে সব বিষয়েই প্রশ্নের বিভাজন ও নম্বর কাঠামো ঠিক থাকবে। যে সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে, সেখান থেকেই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে।
এসএসসির অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে হিসাববিজ্ঞান, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং এবং ব্যবসায় উদ্যোগে ছয়টি করে অধ্যায়; পদার্থবিজ্ঞানে পাঁচটি; জীববিজ্ঞান ও রসায়নে চারটি করে অধ্যায়; পৌরনীতিতে পাঁচটি; ইতিহাসে সাতটি; ভূগোলে ছয়টি; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে তিনটি; কৃষিশিক্ষায় তিনটি; উচ্চতর গণিতে চারটি; ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষায় পাঁচটি; গণিতে পাঁচটি এবং বিজ্ঞানে ছয়টি অধ্যায় রাখা হয়েছে। এইচএসসি ও সমমানের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেও প্রায় একই রকম অধ্যায় রাখা হয়েছে।