‘উচ্চশিক্ষিত বেকার’ না বানিয়ে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে চায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
অনার্স ভর্তিতে যোগ্য শিক্ষার্থী বাছাই, ১২টি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা (পিজিডি) কোর্স এবং ১৯টি শর্ট কোর্স চালু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ‘উচ্চশিক্ষিত বেকার’ না বানিয়ে দক্ষ জনশক্তি/ মানবসম্পদ তৈরি করতে এসব উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, “আমাদের আগের রেকর্ড অনুযায়ী এমনিতেই কম জিপিএ নিয়ে চান্স পায় না। যেখানে আমরা মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করবো, সেখানে আমরা চাইবো কোয়ালিটি স্টুডেন্ট আসুক। যারা রেজাল্ট ভালো করছে না, তারা নানান রকম ট্রেড আছে, সেখানে ভর্তি হবে। সবাইকে কেন অনার্স পড়তে হবে? আমরা যদি কোয়ালিটির কথা বলি—তাহলে তুলনামূলক যারা ভালো ছাত্র তারা অনার্সে পড়তে যাবে। যারা রেজাল্ট ভালো করতে পারছে না তারা মেধাবী নয় তা না। তারাও অনেক ট্রেডে ভালো করতে পারবে। সবাই মিলে উচ্চশিক্ষার দিকে ঝুঁকে লাভ নেই। যেকোনও বিষয়ে যেনতেনভাবে অনার্স-মাস্টার্স করলে লাইফে কিছু করার মতো অবস্থা তৈরি হবে না। আমরা তো ‘শিক্ষিত বেকার’ তৈরি করতে পারি না। আমরা শিক্ষার্থী ভর্তিতে জিপিএ যা নির্ধারণ করেছি সেটা ঠিক আছে।”
২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ভর্তিতে মানবিক বিষয়ে জিপিএ (গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ) এসএসসি সমমান ও এইচএসসি সমমান পরীক্ষায় ৬.৫ নির্ধারণ করে দিয়েছে। আর বাণিজ্য ও বিজ্ঞান পড়তে হলে জিপিএ-৭ থাকতে হবে। যারা এই পয়েন্টের নিচে তাদের জন্য রয়েছে ডিগ্রি কোর্স ও শর্ট কোর্স এবং ডিগ্রি সম্পন্ন হওয়ার পর রয়েছে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা (পিজিডি)। এতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে কেউ বেকার থাকবে না। আর কেউ অনার্স না পড়লেও দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে নিজের জায়গা করে নিতে পারবে চাকরির বাজারে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে জানানো হয়, ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের আগে অনার্সে ভর্তিতে জিপিএ কম রাখা হলেও ভর্তি নেওয়ার ক্ষেত্রে জিপিএ যাদের বেশি তাদেরই নেওয়া হয়েছে। আর সে কারণে বিগত বছরগুলোতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ক্যাডার থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্যাডারে সর্বোচ্চ ভালো ফলাফলের রেকর্ড করতে পেরেছে। ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে জিপিএ বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে অন্য যেকোনও সময়ের চেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগত মান বেড়েছে।
জীবনে প্রথমবার বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে (মেধাক্রম ১৫৮) সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন আবু আবদুল্লাহ। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ২০১৯ সালে স্নাতক পাস করেন। ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স করে ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে মাস্টার্স করে ফাল্গুনী বাগচি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা এই শিক্ষার্থী জাতীয় মেধা তালিকায় ১৩তম হয়ে পররাষ্ট্র ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফেনী সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা শিক্ষার্থী আব্দুল আজিজ জীবনের প্রথম বিসিএস (৪৩তম) চূড়ান্ত পরীক্ষায় শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পেয়েছেন।
বাংলা ট্রিবিউন