শিক্ষা খবরশিক্ষা নিউজ

বাংলাদেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ

বাংলাদেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে ৬ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন, অতিরিক্ত সচিব আলম আরা বেগম, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক তপন কুমার ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে (বিবিএস এর সবশেষ তথ্য), যা ২০০৫ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ছিল মাত্র ৫৩ দশমিক ৫০ শতাংশ।

আরো পড়ুন- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে এ বছর পরীক্ষা নয়

গতবছর সাক্ষরতার হার ছিল ৭৩ দশমিক ৯০ শতাংশ, ২০১৮ সালে ছিল ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ ও ২০১৭ সালে ছিল ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও প্রতিবছর ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস’। ইউনেস্কোর উদ্যোগে ১৯৬৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন করা হয়।

বাংলাদেশে এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য করা হয়েছে- ‘কোভিড-১৯ সংকট: সাক্ষরতা শিক্ষায় পরিবর্তনশীল শিখন-শেখানো কৌশল এবং শিক্ষাবিদদের ভূমিকা’। এবছর মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সীমিত পরিসরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক।

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ নিরক্ষরকে অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন করা হয়। সাক্ষরতা বিস্তারে এ বিশাল অর্জনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ইউনেস্কোর স্বীকৃতিস্বরূপ ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা পুরস্কার ১৯৯৮’ লাভ করে। ‘সবার জন্য শিক্ষা’ এবং ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহ’ সাফল্যের সঙ্গে অর্জনের জন্য ২০১৪ সালে ইউনেস্কো মহাসচিব ইরিনা বোকোভা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘শান্তি বৃক্ষ’ পদক দেন।

আরো পড়ুন- শুধু ভালো ফল নয় ভালো মানুষ হওয়ার পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)’ এবং জাতীয় অঙ্গীকারের সব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সরকার ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০২০) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে চলছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের চতুর্থ লক্ষ্যে সাক্ষরতা বিস্তার, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ও জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির জন্য এই পরিকল্পনায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সাব-সেক্টরের জন্য চারটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এ কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের ৬৪ জেলায় নির্বাচিত ২৫০টি উপজেলার ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ৪৫ লাখ নিরক্ষরকে সাক্ষরতা জ্ঞান কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ১৩৪টি উপজেলায় শিখন কেন্দ্রের মাধ্যমে ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪১ জন নিরক্ষরকে অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন করা হয়েছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আরও ২১ লাখ নিরক্ষরের সাক্ষরতা কার্যক্রম চলমান।

পিইডিপি-৪ এর আওতায় বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশুদের জন্য উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা
দারিদ্র্য, অনগ্রসরতা, শিশুশ্রম, ভৌগলিক প্রতিবন্ধকতা ইত্যাদি কারণে এখনো অনেক শিশু বিদ্যালয় বহির্ভূত রয়েছে। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থায় এসব শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পিইডিপি-৪ এর আওতায় ৮-১৪ বছর বয়সী বিদ্যালয় বহির্ভূত ১০ লাখ শিশুকে উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে ১ লাখ শিশুকে পাইলট প্রকল্পের আওতায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, গাইবান্ধা, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চলমান। করোনাকালীন এসব শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম সংসদ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের সুপার ভাইজর, মনিটরিং অফিসার ও কেন্দ্র শিক্ষক সার্বক্ষণিকভাবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী-অভিবাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে লেখাপড়ার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। অবশিষ্ট ৯ লাখ শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিগগিরই শুরু করা হবে।

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন, ২০১৪ এর আলোকে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বোর্ডের মাধ্যমে সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান যারা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার সঙ্গে জড়িত তাদের প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন, শিক্ষকদের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিরূপণ, শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরীক্ষা গ্রহণ ও সনদ দেওয়া হবে।

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (এনএফইডিপি)
৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং এসডিজি-৪ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নন-ফরমাল এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মাঠ পর্যায়ে তথা উপজেলা পর্যায়ে সেট-আপ তৈরির পর সক্ষমতা বাড়ানোর আলোকে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply