শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না
কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না। প্রাইভেট-টিউশনির সুযোগ না রেখে শর্তসাপেক্ষে ফ্রিল্যান্সিং কোচিং পরিচালনার সুযোগ রেখে আইনের খসড়া তৈরি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়াও নোট-গাইড প্রকাশ নিষিদ্ধ করে শর্তসাপেক্ষে সহায়ক বই প্রকাশের সুযোগ দিয়ে শিক্ষা আইন তৈরি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আজ মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা আইন চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসছে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রনালয়ে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সভাপতিত্ব করবেন। বৈঠকে খসড়া চূড়ান্ত হতে পারে৷
আরো পড়ুন- নোট-গাইড প্রকাশ নিষিদ্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়
প্রস্তাবিত আইনের ৩০ ধারার ১ উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের লিখিত সম্মতি সাপেক্ষে স্কুল সময়ের আগে বা পরে সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধি বা নীতিমালা অথবা জারি করা পরিপত্র বা নির্বাহী আদেশ অনুসরণপূর্বক অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
প্রস্তাবিত খসড়া আইনে বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে ইলেকট্রনিকস বা অনলাইন পদ্ধতিতেও টিউশন বা কোচিং-এর মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না এবং করলে তা অসদাচরণ গণ্যে শাস্তিযোগ্য হবে।
বলা হয়েছে, কোচিংয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময় কোচিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না এবং তা করলে উক্ত শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে এবং উক্ত কোচিংয়ের নিবন্ধন বা অনুমোদন বাতিলযোগ্য হবে।আরো শর্ত থাকে কোচিং সেন্টারের কোনো শিক্ষক তার নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে পারবেন না এবং তা করলে অসদাচরণ গণ্যে শাস্তিযোগ্য হবে।
খসড়া আইনে প্রাইভেট-টিউশন অর্থ—‘কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্তৃক অর্থের বিনিময়ে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে যে কোনো স্থানে পাঠদান করা’।
কোনো কোচিং সেন্টার শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অনুমোদনসাপেক্ষ নির্ধারিত আইন দ্বারা নিবন্ধন ব্যতিরেকে পরিচালনা করা যাবে না। একই কোচিং সেন্টারে দেশি শিক্ষাক্রম ও বিদেশি শিক্ষাক্রমের পাঠদান পরিচালনা করা যাবে না। এই ধারা লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।
শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষার স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি অন্যান্য ফি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। অনুমোদন ব্যতীত কোনো ফি নেওয়া যাবে না।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তির বিষয়ে বলা আছে, শারীরিক শাস্তি দেওয়া যাবে না। তবে শিক্ষার্থীর মঙ্গলের জন্য শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে যৌক্তিকভাবে শাসন করা যাবে। এই ধরনের শাসনের জন্য উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে শিক্ষক দায়ী হবেন না।
এদিকে নোট-গাইডের বিষয়ে খসড়া আইনে বলা হয়েছে সরকারের অনুমোদন ছাড়া পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু এবং এর আলোকে বিভিন্ন প্রশ্নাবলীর উত্তর দৈনিক পত্রিকায় বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমেও প্রকাশ করা যাবে না। এই বিধান লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।