শিক্ষা নিউজ

সারাদেশে ঢিলেঢালা ভাবে পালিত হচ্ছে সাত দিনের লকডাউন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে আজ (সোমবার) ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের ‘লকডাউন’ শুরু হয়েছে দেশে। আগামী ১১ এপ্রিল রাত ১২ টা পর্যন্ত চলবে এ লকডাউন। লকডাউনের মাধ্যমে সরকার একগুচ্ছ বিধিনিষেধের বেড়াজালে সংক্রমণ বিস্তার রোধের চেষ্টা করছে। কিন্তু লকডাউন শুরু হলেও সারাদেশে ঢিলেঢালা ভাবে পালিত হচ্ছে সাত দিনের লকডাউন।

আরো পড়ুন- লকডাউনে যা খোলা যা বন্ধ, মানতে হবে যেসব বিধি নিষেধ

সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ঔষধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। কিন্তু অধিকাংশ এলাকায় সরকারি নির্দেশনা না মেনে প্রয়োজন ছাড়াই অনেকে বাইরে বের হচ্ছে। এমনকি স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে না।

সরকারি নির্দেশনা না মেনেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন উপেক্ষা করে গণপরিবহন চলতে দেখা গেছে৷ সরকারি নির্দেশনায় লকডাউনে সব প্রকার গণপরিবহণ (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নির্দেশ মোতাবেক লকডাউনে শুধু জরুরি যানবাহন চলাচল করা যাবে। নৌ রেল অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকলেও সড়কে নানা ধরনের গণপরিবহন চলতে দেখা গেছে৷

নির্দেশনা বলা হয়েছে লকডাউনে শপিং মলসহ অন্যান্য সব দোকান বন্ধ থাকবে। তবে দোকানগুলো পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে কেনাবেচা করতে পারবে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন এলাকায় শপিং মলসহ অন্যান্য দোকানপাট খোলা রয়েছে এবং সরাসরি কেনাবেচা করতে দেখা গেছে। এদিকে হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না বলা হলেও অনেক হোটেল রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করতে দেখা গেছে।

এর আগে লকডাউন ঘোষণা ও এই সময়ে পালনের জন্য ১১টি বিধি-নিষেধের কথা জানিয়ে রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত প্রতিপালনের জন্য ১১টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এগুলো নির্দেশনা হচ্ছে- ১. সব প্রকার গণপরিবহণ (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহণ, উৎপাদন ব্যবস্থা, জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া, বিদেশগামী/বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।
২. আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন বন্দরের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।
৩. সব সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহণ ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে। শিল্প-কারখানা ও নির্মাণ কার্যাদি চালু থাকবে। শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিবহণ ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে শিল্প-কারখানা এলাকায় কাছাকাছি সুবিধাজনক স্থানে তাদের শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল/চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ঔষধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।
৫. খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না।
৬. শপিং মলসহ অন্যান্য সব দোকান বন্ধ থাকবে। তবে দোকানগুলো পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে কেনাবেচা করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের মধ্যে আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং কোনো ক্রেতা সশরীরে যেতে পারবে না।
৭. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
৮. ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
৯. সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
১০. সারা দেশে জেলা ও মাঠপ্রশাসন এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।
১১. এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ নির্দেশনার কপি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব/সচিবকে এ নির্দেশনা পাঠিয়ে তা অধীন দপ্তর/সংস্থাগুলোকে বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

উল্লেখ্য করোনার বিরুপ পরিস্থিতির কারণে প্রায় এক বছর পর আবার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ দিতে হলো সরকারকে। সাত দিনেই সংক্রমণ কমিয়ে আনতে নিয়মিত কার্যক্রমে ফেরার লক্ষ্যে দেশজুড়ে ‘লকডাউন’ঘোষণা করে সরকার। গত বছর সংক্রমণ কমাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এমনকি কয়েক দফায় সেটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply