কাঠমিস্ত্রির কাজ করেও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম মোস্তাকিম
কাঠমিস্ত্রির কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়াশোনা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন মোস্তাকিম আলী। এ অদম্য পরিশ্রমী ও মেধাবী মোস্তাকিমকে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) সংবর্ধনা দিয়েছে।
রাজশাহীর তানোর উপজেলার বাঁধাইড় মিশনপাড়া গ্রামের সামাউন আলীর ছেলে মোস্তাকিম। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় মোস্তাকিম। তার বাবা পেশায় কাঠমিস্ত্রি। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে মোস্তাকিম বাবার পেশায় যুক্ত হন। দিনে তিনি কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন এবং রাতে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। মুন্ডুমালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে তিনি জিপিএ-৪.৫৫ নিয়ে মাধ্যমিক এবং ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২০ সালে জিপিএ-৪.৮৩ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদিনা ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজে ইংরেজি বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হলেও পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আকাঙ্খা থেকে এইচএসসিতে পুনরায় মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেন এবং রাবির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। ভর্তি পরীক্ষার ১৫ দিন আগে প্রস্তুতির জন্য বাবার কাছ থেকে তিনি ছুটি নেন। পরীক্ষায় তিনি ‘বি’ ইউনিটের গ্রুপ-৩ এ ৮০ দশমিক ৩০ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
বৃহস্পতিবার আরএমপির সদর দপ্তরের সম্মেলনকক্ষে আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। একই সঙ্গে শিক্ষা উপকরণ কেনার জন্য তাকে আরএমপি কমিশনার আর্থিক সহায়তা দেন।
অনুষ্ঠানে আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্য অর্জনে মোস্তাকিমের মতো তরুণ মেধাবীদের এগিয়ে আসতে হবে। তরুণদের মেধা বিকাশে এবং অন্যসব ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, যে কোনো মেধাবীর প্রয়োজনে আরএমপি সব সময় পাশে থাকবে। এ সময় মোস্তাকিম বলেন, এ সংবর্ধনা ভবিষ্যতে দেশের জন্য কাজ করতে আমাকে অনুপ্রেরণা জোগাবে। তার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় তিনি পুলিশ কমিশনারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।