Wednesday, April 24, 2024
Education News

শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু রচনা ৫০০ শব্দ Sheikh Rasel Amader Bondhu Paragraph 500 words| শেখ রাসেল অনুচ্ছেদ

শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু রচনা  ৫০০ শব্দ  Sheikh Rasel Amader Bondhu Paragraph 500 words| শেখ রাসেল অনুচ্ছেদ | পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় আগে বাঙালি জাতির মধ্যে আবির্ভাব ঘটেছিল এমনই এক ক্ষণজন্মা প্রতিভাবান শিশুর।

শেখ রাসেল অনুচ্ছেদ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেল। মাত্র ১১ বছর বয়সে ‘৭৫ এর সেনা অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সঙ্গে তাকেও হত্যা করা হয়। কিন্তু জীবনের এই স্বল্প কয়েকটি দিনে রাসেল হয়ে উঠেছেন সমগ্র বাঙালি জাতির পরম বন্ধু স্বরূপ। তাঁর স্মৃতিচারণার উদ্দেশ্য নিয়েই আজ আমাদের এই প্রতিবেদনটির উপস্থাপনা।

 

ভূমিকা:

বাঙালি জাতির অন্দরমহল থেকে যুগে যুগে আবির্ভাব ঘটেছে অসংখ্য মহান ব্যক্তিত্বের। তাদের কাউকে বা আমরা যথাযথ সম্মান দিয়ে চিরকাল মনে রেখেছি, আবার অনেকেই হারিয়ে গেছেন বিস্তৃতির অতল গহবরে। তবে বাঙালি জাতি বর্তমানে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, তার পেছনে কিছু না কিছু অবদান রয়েছে সেই সকল ব্যক্তিদেরই।

 

স্বাধীনতা দিবসে স্মরণ করি তার বীর পুত্র শেখ কামাল এবং শেখ জামালকে। তবে প্রায়শই যাকে আমরা ভুলে যাই তিনি হলেন ওই একই পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। মাত্র ১১ বছর বয়সে নির্মম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া রাসেল হয়তো তার কর্মের দ্বারা বাঙালি জাতির ইতিহাস ও উত্থানে দাগ কেটে রেখে যেতে পারেনি, তবে তার কয়েক বৎসরের জীবন বাঙালি জাতির ইতিহাসকে এতই প্রভাবিত করেছে যে কখন তিনি বঙ্গবন্ধু সর্বকনিষ্ঠ পুত্রের সিংহাসন থেকে নেমে এসে আমাদের বন্ধু হয়ে উঠেছেন, তা আমরা বুঝতেই পারিনি।

 

শেখ রাসেলের জন্ম:

শেখ রাসেলের জন্মের ইতিহাস বড়ই সুন্দর। ১৯৬৪ সালের অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখ। দেশ তখন ভরা হেমন্তের গন্ধে আকুল হয়ে আছে। গ্রাম্য সভ্যতা ভিত্তিক আমাদের দেশের ঘরে ঘরে তখন নতুন ফসল তোলার আনন্দ। এমনই আনন্দের দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাসায় জন্ম গ্রহণ করলেন শেখ রাসেল। তার জন্ম হয়েছিল বড় আপা শেখ হাসিনার ঘরে। সমগ্র বাড়ি জুড়ে সেদিন আনন্দের জোয়ার। জন্মের কিছুক্ষন পর শেখ হাসিনা এসে ওড়না দিয়ে তার ভেজা মাথা পরিষ্কার করে দেন।

শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু রচনা ৫০০ শব্দ Sheikh Rasel Amader Bondhu Paragraph 500 words| শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু |

নামকরণ:

শেখ রাসেলের নামকরণের পেছনেও এক সুন্দর কাহিনী রয়েছে। বঙ্গবন্ধু বরাবরই ছিলেন বিশ্বশান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষপাতী এবং যুদ্ধের ঘোর বিরোধী। এই সূত্র তিনি বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের একজন গুণমুগ্ধ ভক্ত ছিলেন।

 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সমগ্র পৃথিবী যখন সম্ভাব্য একটি পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কায় সন্ত্রস্ত হয়ে আছে, তখন যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন বার্টান্ড রাসেল। এমনই মহান ব্যক্তির ব্যক্তিত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে বঙ্গবন্ধু তার কনিষ্ঠ পুত্রের নাম রাখেন শেখ রাসেল।

 

ছেলেবেলা:

শেখ রাসেলের ছেলেবেলা দেশের সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির মতোই বর্ণময়। জন্মের পর খুব বেশি দিন তিনি বাবার সান্নিধ্য পাননি। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কিছুদিনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথমে ঢাকায় থাকলেও পরে পাকিস্থানে তাকে স্থানান্তরিত করা হয়।

 

নির্মম হত্যাকাণ্ড:

১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট এর সেই অভিশপ্ত রাতের সঙ্গে পরিচিতি আমাদের সকলেরই রয়েছে। সেই রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্মম পরিণতির কথা আমরা সকলেই কম বেশি জানি। একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা সেই দিন রাতে শেখ মুজিবের ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবন ট্যাংক দিয়ে গিলে ফেলেন। সেইদিন প্রত্যুষে বঙ্গবন্ধু, এবং ব্যক্তিগত কর্মচারীদের সাথে শেখ রাসেলকেও হত্যা করা হয়।

শেখ মুজিবের ব্যক্তিগত কর্মচারী মহিতুল ইসলামের কথা অনুযায়ী, রাসেল দৌড়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরেন, জানতে চান সেনারা তাকেও মারবে কিনা। এমতাবস্থায় একজন সেনা কর্মকর্তা মহিতুলকে এসে মারলে রাসেল তাকে ছেড়ে দেয়। সে কাঁদতে থাকে থাকে মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই সময় একজন ঘাতক রাসেলকে ভেতরের ঘরে নিয়ে গিয়ে ব্রাশ ফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করে।

 

কেন শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু?

শেখ রাসেল কেন আমাদের বন্ধু, কীভাবেই বা তিনি আমাদের বন্ধু হয়ে উঠলেন বুঝতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে রাসেলের ছেলেবেলার দিনগুলিতে। তার ছেলেবেলার দিনগুলো সম্পর্কে যেটুকু জানা যায় তার অধিকাংশই শিশু বয়সের নিষ্পাপ আত্মভোলা কর্মকাণ্ড। শোনা যায় বঙ্গবন্ধুর বাসায় টমি নামে একটি কুকুর ছিল যার সাথে ছোট্ট রাসেল খেলে বেড়াতো। একদিন খেলার সময় কুকুরটি জোরে ডেকে উঠলে ছোট রাসেলের মনে হয় টমি তাকে বকেছে।  শিশু রাসেল তার আপা রেহানার কাছে এসে কাঁদতে থাকেন।  আরো শোনা যায় রাসেলের মাছ ধরার খুব শখ ছিল।

মাছ ধরে আবার সেই মাছ সে পুকুরেই ছেড়ে দিত। এই ছিল তার মজা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র জয়ের জন্ম হলে রাসেল জয়কে নিয়ে খেলত সারাদিন। তার স্বভাব ছিল অত্যন্ত দুরন্ত প্রকৃতির। আর এই দুরন্তপনার সঙ্গী ছিল একটি বাইসাইকেল। রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ভেঙে সেই বাইসাইকেলকে সঙ্গী করে রোজ স্কুলে যেত রাসেল। রাসেলের শৈশব আখ্যান যেন আমাদের সকলের শৈশবের গল্প বলে দেয়। তার শৈশবের গল্প কথাগুলির মধ্যে আমরা যেন বারবার নিজেদেরই খুঁজে পাই। পড়াশোনা, খেলাধুলা, দুরন্তপনা এসব নিয়ে রাসেল আমাদের সকলের কাছেই হয়ে ওঠে শৈশবের এক মূর্ত প্রতিমূর্তি।

 

উপসংহার:

শেখ রাসেল বাঙালি জাতির কাছে এক যুগোত্তীর্ণ ব্যক্তিত্ব। বাঙালি জাতি তার মধ্যে খুঁজে পায় রূপকথার মতো নিজেদের ছেলেবেলাকে। শেখ রাসেলের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে আপামর বাঙালির শৈশব। অন্যদিকে তার নির্মম মৃত্যুর কাহিনী বারবার মনে করিয়ে দেয় আমাদের দেশের করুন ইতিহাসের কথা। সেই সমস্ত নৃশংস ক্ষমতালোভী মানুষের কথা যারা কেবলমাত্র ক্ষমতার লোভে ১১ বছরের একটি ছোট্ট শিশুকে অবধি রেহাই দেয়নি। ভালো মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠার পেছনে পরিবার একটি বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন আদর্শ মাতা। তিনি তাঁর সন্তানদের নৈতিক শিক্ষায় মানুষ করেছেন, দিয়েছেন মানবিক গুণাবলিও। ঠিক তেমনিভাবে শেখ হাসিনার মাঝে অনুরূপ গুণাবলি প্রতীয়মান। তিনি তাঁর সন্তানকে নৈতিক শিক্ষা আর মানবিক গুণাবলি দিয়ে জয়-পুতুলকেও গড়ে তুলেছেন। শিশু রাসেল বেঁচে থাকলে আজকের ৫৬ বছরের মানুষটিও হতেন এক অনন্য গুণাবলির ব্যক্তিত্ব।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply Cancel reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.