কারক নির্ণয় করার সহজ উপায় ? কারক চেনার সহজ উপায় pdf
কারক নির্ণয় করার সহজ উপায় হচ্ছে ক্রিয়াপদকে প্রশ্ন করা। ক্রিয়াপদের সাথে নামপদের # ছয় প্রকার সম্পর্ক থাকতে পারে। আর এই সম্পর্কের উপর নির্ভর করে কোনটি কোন কারক।
ক্রিয়াপদকে প্রশ্ন করলে খুব সহজে কারক বেরিয়ে আসবে।
কর্তৃকারক:
ক্রিয়াপদকে কে/কারা দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যাবে তা কর্তৃকারক। “মাহফুজুর রহমান” গান গায়। কে গায়? উঃ মাহফুজুর রহমান। কে দ্বারা প্রশ্ন করে উত্তর মিলেছে। তাই এটি কর্তাকারক।
কর্মকারক:
ক্রিয়াপদকে কী বা কাকে দ্বারা প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যাবে তা কর্মকারক। যেমনঃ মাহফুজুর রহমান “গান” গায়
মাহফুজুর রহমান কী গায়? উঃ গান। কী দ্বারা প্রশ্ন করে উত্তর মিলেছে। তাই এটি কর্মকারক।
করণকারক:
(যন্ত্র,সহায়ক, উপায়)ক্রিয়াপদকে কিসের দ্বারা/কিসের সাহায্যে/কার সাহায্যে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যাবে তা করণকারক। আমি “কলম” দ্বারা লিখি। কী দ্বারা লিখি? – কলম। এখানে কলম একটি যন্ত্র/সহায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করে।
সম্প্রদান কারক:
ক্রিয়াপদকে কাকে/কার জন্য দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যাবে তা সম্প্রদান কারণ। যদি স্বত্ব(মালিকানা) ত্যাগ করে দান বুঝায়। “সৎপাত্রে” কন্যাদান করা হল। কাকে দান করলো? উঃ সৎপাত্রে। বাবা যখন মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয় তখন একেবারে সব কিছু ছেড়েই বরের হাতে তুলে দেয়। এতে মেয়ের মান সম্মান, ভরণপোষণ, ইজ্জত সবই তখন বরের হাতে। তাই এখানে পিতার মালিকানা ত্যাগ করে দান করা হয়েছে।
অপাদান কারক:
ক্রিয়াপদকে কোথা হতে বা কী হতে দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যাবে তা অপাদান কারক। খেয়াল রাখবেন, অপাদান কারক সবসময় (- মাইনাস) বুঝাবে। অর্থাৎ কোন কিছু থেকে কমে গেছে অথবা বাদ পড়েছে।
যেমন, ছাদ থেকে পানি পড়ে। এটা অপাদান কারক। কারণ কোথা হতে পড়ে? ছাদ থেকে। অর্থাৎ পানিগুলো বিয়োগ হচ্ছে।(বিসিএসে এখান থেকে প্রায় প্রশ্ন এসেছে।)
অধিকরণ কারক:
ক্রিয়াপদকে কোথায়/কখন দ্বারা প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যাবে তা অধিকরণ কারক। যেমন, সে ঢাকায় থাকে। কোথায় থাকে? ঢাকায়। একটা স্থানকে বোঝানো হয়েছে।
কারকের কিছু কনফিউশনাল ব্যাপার লক্ষ করুণঃ
* সৎপাত্রে কন্যা দান করা হল। এটাকে দেখেই সম্প্রদান কারক দাগানোর দরকার নেই। খেয়াল রাখবেন দাগ কিসের নিচে দিয়েছে। যদি সৎপাত্রে দেয় তাহলে হবে সম্প্রদান আর যদি কন্যার নিচে দাগ দেয় দেয় তাহলে হবে কর্মকারক।
* ছাদ থেকে পানি পড়ছে। এটা অপাদান কারক। আর যদি আসে ‘ছাদে পানি পড়ছে’ তাহলে এটা অধিকরণ কারক।
আগেই বলেছি প্লাস(+) হলে অধিকরণ আর মাইনাস(-) হলে অপাদান কারক।
বৃষ্টিতে আকাশ থেকে ছাদে পানি যোগ হচ্ছে তাহলে এটা অধিকরণ কারক। ছাদ থেকে পানি পড়ে গিয়ে নিচে চলে যাচ্ছে তারমানে বিয়োগ হয়ে যাচ্ছে। তাই এটা অপাদান কারক।
* রেল ঢাকা ছেড়ে গেল, রেল ঢাকায় আসলো।
রেল ঢাকা ছাড়লে রেল কমে যাচ্ছে।
ধরুণ, ৫টা রেল ছিল এখন একটা রেল চলে যাওয়াতে আর আছে ৪টা। তারমানে কমে গেল। তাই অপাদান কারক। আবার ধরুণ, রেল ঢাকায় এসে পৌঁছালো। এখানে আগের ৫টা ছিল, এখন নতুন একটা এসে ৬টা হল। এর মানে যোগ হল তাই এটা অধিকরণ কারক।
মনে রাখেবন, ক্রিয়াপদকে প্রশ্ন করা যদি ভুল হয় তাহলে কারক নির্ণয়ও ভুল হবে। তাই এই বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে।
কারকের সাথে বিভক্তি নির্ণয়ের জন্য অবশ্যই বিভক্তি চিহ্নগুলো মুখস্ত করতে হবেঃ-
১মা বা শূন্য বিভক্তি: অ,০
২য়া বিভক্তি: কে,রে
৩য়া বিভক্তি: দ্বারা,দিয়ে,কর্তৃক
৪র্থী বিভক্তি: কে,রে
৫মী বিভক্তি: হতে,থেকে,চেয়ে
৬ষ্ঠী বিভক্তি: র,এর
৭মী বিভক্তি: এ,য়,তে
(বি:দ্র:স্বত্ব ত্যাগ করলে সম্প্রদান কারক আর না করলে কর্মকারক।সম্প্রদান কারকে ‘কে’ ৪র্থী বিভক্তি আর কর্মকারকে ‘কে’ ২য়া বিভক্তি)
কারক নির্ণয়ের সহজ উপায়:-
কে, কারা বুঝালে = কর্তৃকারক
কী, কাকে বুঝালে = কর্মকারক
দান, সেবা, ভক্তি বুঝালে = সম্প্রদান কারক
উৎপাদন, জাত, বিচ্যুত, ভয় বুঝালে = অপাদান কারক
যন্ত্র, উপকরণের সহায়ক বুঝালে = করণ কারক
স্থান, কাল, পাত্র বুঝালে = অধিকরণ কারক
কারক নির্ণয়ের সূত্র
কারক চেনার সহজ উপায় pdf
ছন্দে ছন্দে কারক মনে রাখার কৌশল
কারক এর উদাহরণ
কারক ও বিভক্তি নির্ণয় উদাহরণ
কারক নির্ণয় করো
কর্ম কারক চেনার উপায়
কারক ও বিভক্তি নির্ণয়ের সহজ কৌশল