জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনজট নিরসনে শিক্ষার্থীরা চান অটোপাস, যা বললেন কর্তৃপক্ষ

একসময় সেশনজটের শীর্ষে থাকা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে দূর করে সেশনজট। বছরের পর বছর অনেক চেষ্টায় সেশনজট কাটিয়ে ওঠার পর করোনার কারণে আবারও সেশনজটে ফিরেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে সব বর্ষের অনার্সের শিক্ষার্থীরা অটোপাস চাচ্ছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দাবি মানতে নারাজ।

আরো পড়ুন- চাকরির আবেদন করতে পারছে না অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ সমূহে নন-এমপিও শিক্ষকদের একটি তালিকা প্রেরণ সংক্রান্ত নোটিশ

করোনা মহামারি শুরুর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ফাইনালের পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার নেওয়ার পর পুরো শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। অপরদিকে প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না এলে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর জানায়, বেশ কয়েক বছর থেকে সেশনজটমুক্তভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পরীক্ষা ও ক্লাস সবটাই এখন বন্ধ। করোনা পরিস্থিতি শীতে বাড়তে পারে, সে কারণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা অটোপাস চাচ্ছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আগে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা-ই রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, অনার্স প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল গত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে, অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের অক্টোবর-নভেম্বরে এবং অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে যথাসময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। আর করোনার আগে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার পাঁচ বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনার শুরুর পর অন্য পরীক্ষা হয়নি।

শিক্ষার্থীরা গত দুই মাস ধরে সেশনজট থেকে বাঁচতে অটোপাস চাইছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে পরীক্ষা সম্পন্ন না করে অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে সনদ দেওয়া হবে না। আর প্রথম বর্ষ থেকে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বলেন, ‘অনার্স চতুর্থ বর্ষের বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের ৫টি পরীক্ষা হয়েছে। চারটি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি আছে। মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষার তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি রয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষাও বাকি। ওইসব শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে—যেসব পরীক্ষা হয়েছে তার ওপর ভিত্তি ফলাফল দিতে হবে।

উপাচার্য বলেন, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান হচ্ছে—অর্ধেক রাস্তায় এসে যদি বলেন পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হোক, তাহলে অসম্পূর্ণ ফল নিয়ে না পারবেন বিদেশের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে। আর চাকরির জন্য আবেদন করলে চাকরিদাতারা জানবেন আপনারা সব বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে আসেননি। তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য এটা হিতে বিপরীত হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য পার্মানেন্ট সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। যে কারণে তাদের উদ্দেশ্যে বলেছি—ধৈর্য ধরতে। আমরা অল্প সময়ের মধ্যে বাকি পরীক্ষাগুলো নিয়ে ফলাফল ন্যূনতম সময়ের মধ্যে দেবো। ’

কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বেড়ে যাওয়া এবং শীতে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের এই কথায় আস্থা রাখতে পারছেন না। তারা সেশনজটমুক্ত থাকতে চাইছেন অটোপাস। এমন পরিস্থিতি চলমান থাকলে প্রায় এক বছরের সেশনজটে পড়তে পারে শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন- অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সেশনজট কমানোর জন্য ২০১৪ সালে একবার ক্রাশ প্রোগ্রাম নেওয়া হয়। এ কারণে শিক্ষাবর্ষ ১ বছরের স্থলে ৮ মাস হয়েছিল। সেজশজট নিরসনের জন্য দ্রুত ফরম পূরণ, পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশের উদ্যোগের নাম ক্রাশ প্রোগ্রাম। পাঠদান ও শিক্ষাগ্রহণ বড় বিষয় নয়, পরীক্ষা নিয়ে সেশনজট কমানোই ছিল ঐ প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য। বছরের পর বছর অনেক চেষ্টায় এ সেশনজট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply