সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। অতীতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট থাকলেও এখন সেটি আর নেই। যার কারণে শিক্ষার্থীরা ২৩ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে স্নাতকোত্তর শেষ করে ফেলেন। চাকরির জন্য তারা ছয় থেকে সাত বছর সময় পান। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।
সংসদে আজকের প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য হাবিব মিল্লাত চাকরিতে প্রবেশে বয়স কেন বাড়ানো হবে না জানতে চান। সেই প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীরা সাধারণত ১৬ বছরে এসএসসি, ১৮ বছরে এইচএসসি এবং ২৩–২৪ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকেন। সাধারণ প্রার্থীদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর বিধায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য কমপক্ষে ছয় থেকে সাত বছর সময় পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে কোনো প্রার্থী চাকরির আবেদন করলে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে এক থেকে দুই বছর সময় লাগলেও তা গণনা করা হয় না।
প্রতিমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৭ হতে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ায় বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমেছে। এই প্রেক্ষাপটে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে অধিকতর প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে যাদের বয়স বর্তমানে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে তারা চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পেলেও অনূর্ধ্ব ৩০ বছরের প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে।
Read more- চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫-৪০ বছর করা যেতে পারে । সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়সসীমা পুর্নবিন্যাসের সময় এসেছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি মনে করেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে ৩৫ কিংবা ৪০ বছর করা যেতে পারে। এ ছাড়া অবসরের বয়সও ৬৫ করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয় চিন্তা করতে হয়। উন্নত দেশে বাংলাদেশের মতো ক্যাডার, বয়স বা নিয়মকানুন নেই। ব্রিটিশরা যে মানসিকতা থেকে এটা করেছিল, তা আর খাটে না। আমাদের বয়স, স্বাধীনতা, সক্ষমতা, বিদ্যাবুদ্ধি বেড়েছে। সুতরাং এটার পুনর্বিন্যাস প্রয়োজন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমার মতে, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩৫-৪০ বছর করা যেতে পারে। অবসরের বয়সও ৬৫ করে পুনর্বিন্যাসের সময় এসেছে। অনেক চাকরিতে এটা আছে। এটা নিয়ে চিন্তা করার অবকাশ আছে।’
এম এ মান্নান বলেন, করোনার আগে বেকারের সংখ্যা ছিলো ২০ শতাংশ। তবে করোনার কারণে অনেকের কাজ নেই। সিপিডি ও পিআরআইসহ বিভিন্ন সংস্থার হিসেবে ৩৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে ফের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় এখন আর ৩৫ শতাংশ নেই, তবে ২০ ভাগেও আসেনি। এটা ২২ থেকে ২৫ শতাংশ হবে।
তিনি বলেন, পশ্চিমা যারা উন্নত তাদের বয়সসীমা নেই। আমরা এখনো ওই পর্যায়ের উন্নত হইনি। কোন বাধা না থাকলে আমাদের জন্য বেশি উদার হয়ে যাবে। তবে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ থেকে বাড়ানো উচিৎ, যদিও এটা সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপার বলে জানান তিনি।।
মন্ত্রী বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ালে প্রতিযোগিতাও বাড়বে। এখন বয়স ৩০ পার হলে তিনি ছিটকে পড়েন। বয়স বাড়ালে আরও নতুন মুখ আবেদন করার সুযোগ পাবেন। এতে প্রতিযোগিতাও বাড়বে।
তিনি বলেন, অবসরের বয়স বাড়ালে আর নিচের দিকে বয়স না বাড়ালে অসম ক্ষেত্র তৈরি হয়ে যাবে। আর উপরের দিকে বয়স বাড়িয়ে নিচের দিকেও বাড়ালে ব্যালেন্স হবে। তবে এটা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অনেক চিন্তাভাবনা করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
dw