রেজিষ্ট্রেশন ফি ফেরতের দাবি HSC পরীক্ষার্থীদের, দাবি নাকচ শিক্ষাবোর্ডের
বাতিল হয়ে যাওয়া ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমামানের পরীক্ষার্থীরা অভিভাবকরা রেজিস্ট্রেশনের টাকা ফেরতের দাবি তুলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তারা এমন দাবি করছেন। তবে শিক্ষাবোর্ড বলছে, পরীক্ষার সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছিল। সে কারণে ফি ফেরত দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আরো পড়ুন- এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পাচ্ছে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী
এর আগে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত অনলাইন বৈঠকে পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এমন ঘোষণার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরীক্ষার ফি হিসেবে নেয়া ৩ হাজার টাকা ফেরতের দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে রেজিস্ট্রেশন ফি ফেরতের দাবিতে স্ট্যাটাসও দেন অনেকে। তবে শিক্ষার্থীদের এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে শিক্ষাবোর্ড।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল হলেও রেজিস্ট্রেশনের কোনো টাকা ফেরত দেয়া হবে না। কেননা এর পুরো টাকাটাই পরীক্ষা আয়োজনের জন্য খরচ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশনের জন্য যে ফি নেয়া হয়েছিল সে টাকা খরচ করে প্রশ্ন ছাপানো হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষাও প্রায় আয়োজন করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে স্থগিত হওয়ায় পরীক্ষা নেয়া যায়নি, এজন্য আপাতত রেজিস্ট্রেশন ফি ফেরত দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আরো পড়ুন- এইচএসসির ফল ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে, কমিটির কাজ শুরু
এ বিষয়ে জানাতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, ‘কেউ যদি বলে আমরা কেন্দ্র ফি ফেরত চাই, ঠিক আছে কেন্দ্র ফি ফেরত চাইলে পরীক্ষা দাও! অষ্টমের জেএসসি-জেডিসি এবং মাধ্যমিকের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল থেকে এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের ফল দেওয়া হলে তাতে সবাই উত্তীর্ণ হয়ে যাবে। ’
পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তোমারা তো সবই পেয়ে যাচ্ছ। আর আমরা তো জায়গায় জায়গায় টাকা খরচ করেছি, এরা এটা বুঝতেছে না।
শিক্ষা বোর্ড থেকে জানা যায়, এইচএসসির ফরম পূরণের জন্য গত বছরের নভেম্বরে কেন্দ্র ফি সহ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের ২৫০০ টাকা এবং মানবিক ও বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থীদের ১৯৪০ টাকা করে ফি ধরা হয়। এরমধ্যে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের বোর্ড ফি ১৬৯৫ টাকা, মানবিক ও বাণিজ্যে ১৪৯৫ টাকা করে এবং বিজ্ঞানে কেন্দ্র ফি (ব্যবহারিক ফি সহ) ৮০৫ টাকা এবং মানবিক ও বাণিজ্যে ৪৪৫ টাকা করে নেওয়া হয়।
কেন্দ্র ফি থেকে থেকে ট্যাগ অফিসারের সম্মানীসহ অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করতে বলা হয়। কিন্তু যাদের ব্যবহারিক বিষয় আছে তাদের টাকার সঙ্গে প্রতি পত্রের জন্য আরো ২৫ টাকা করে দিতে হয়েছে। এছাড়া ব্যবহারিক উত্তরপত্র মূল্যায়নে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত পরীক্ষকের জন্য পত্র প্রতি ২৫ টাকা করে কেটে নেওয়া হয়।
আরো পড়ুন- পরীক্ষা ছাড়াই নিবন্ধিত শতভাগ শিক্ষার্থী এইচএসসি পাস করবে
ফরম পূরণের জন্য একজন নিয়মিত শিক্ষার্থীকে প্রতি পত্রের জন্য ১০০ টাকা, ব্যবহারিক প্রতি পত্রের জন্য ২৫ টাকা, একাডেমিক/ট্রান্সক্রিপ্ট ফি ৫০ টাকা, সনদ ফি ১০০ টাকা, রোভার স্কাউট/গার্লস গাইড ফি ১৫ টাকা এবং জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি ৫ টাকা ধরা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির উৎকণ্ঠা নিয়ে ছয় মাস পর পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত পেল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। গত ১ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল।