শিক্ষা নিউজ

শিক্ষকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর

শিক্ষকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডের বকেয়া বেতন দিতে ৬৯৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ৫১৩টি উপজেলার শিক্ষকদের বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধ ও অন্যান্য খরচ মেটাতে এ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী ১৪ জুনের মধ্যে এসব উপজেলার যেসব শিক্ষকের বকেয়া বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে তাদের বকেয়া অবশ্যই পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

 

২০২১.২০২২ অর্থবছরে রাজস্ব বাজেটে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খাতে পাওয়া বরাদ্দ থেকে ৬৯৭ কোটি ৭৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ৫১৩টি উপজেলা শিক্ষা অফিসের আওতায় কর্মরত শিক্ষকদের বেতনভাতা ও অন্যান্য খাতের ব্যয় নির্বহের জন্য ঘাটতি বাজেটে বরাদ্দ ও মঞ্জুরি দেয়া হয়েছে এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে এ টাকা বিধিমোতাবেক ব্যয়ের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

 

আদেশে বলা হয়েছে, এ ব্যয় ২০২১-২২ অর্থবছরের রাজস্ব বাজেটে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খাতে বরাদ্দকৃত টাকা থেকে মেটানো হবে। এ টাকা সরকারি বিধি মোতাবেক ব্যয় করতে হবে। যেকোনো প্রকার অনিয়মিত ব্যয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট আয়ন ব্যয়ন কর্মখর্তার ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন।

২০২১-২২ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত টাকা থেকে শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডের বকেয়া পরিশোধ করা যাবে। ইতোমধ্যে যাদের ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ হয়েছে, তাদের প্রাপ্য বকেয়া আগামী ১৪ জুনের মধ্যে অব্যশ্যিকভাবে পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন।

 

অব্যয়িত টাকা ১৫ জুনের মধ্যে সমর্পন করতে হবে। চাহিদার অতিরিক্ত টাকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেমের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। সিস্টেমে মাসিক খরচ এন্ট্রি দিতে হবে।

২০২০ সালে সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড কার্যকর হওয়ার অনেক শিক্ষকেই বকেয়া বেতন ভাতা পাবেন। গত ১১ মে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডের বকেয়ার চাহিদা জানতে চাওয়া হলো।

 

২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড-১৪ (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) এবং বেতন গ্রেড-১৫ (প্রশিক্ষণবিহীন) থেকে গ্রেড-১৩ তে উন্নীত করা হয়। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব হওয়ায় সব শিক্ষকের বেতন গ্রেড উন্নিত হওয়া নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছিলো। পড়ে সে জটিলতা নিরসণের পর আইবাস প্লাস প্লাসে শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ ও ফিক্সেশন নিয়ে ফের জটিলতা হয়। এত কিছুর পর ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শুরু করেন। বেতন নির্ধারণের পর বেতন প্রাপ্তির সময় পর্যন্ত সব শিক্ষকের ১৩তম গ্রেডে বেতনের কিছু অংশ বকেয়া ছিলো।

আরো পড়ুন-

করোনার কারণে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিশুদের প্রাক-বিদ্যালয় বা বিদ্যালয়-পূর্ব উপযোগী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিন্ডারগার্টেন। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা কিন্ডারগার্টেন, প্রি-প্রাইমারি, প্রি-ক্যাডেট ও প্রিপারেটরি স্কুলগুলোর প্রায় ১০ লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। করোনায় গত ৭ মাসে ৫ শতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়েছে। বন্ধের পথে আরো সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বেকার হয়েছেন কয়েক লাখ শিক্ষক-কর্মচারী। অনেকেই শিক্ষকতার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষার্থীদের ফি ছাড়া আয়ের অন্য কোনো উৎস নেই। শিক্ষকরা অল্প বেতনে চাকরি করেন। শিক্ষকদের আয়ের আরেকটি উৎস টিউশনি। করোনার কারণে সবই বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুল মালিকও পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। বাধ্য হয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ করেছেন তারা।

কিন্ডারগার্টেন মালিকরা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে সারা দেশে অর্ধলক্ষাধিক কিন্ডারগার্টেন পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠান শিশুদেরকে আদর্শ মানুষ গড়তে নিরলসভাবে কাজ করেছে। ফলাফলও ভালো করেছে। ফলে শিক্ষার মান দিনদিন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে করোনার থাবায় সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দেশের বহু কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে। ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে আরো প্রায় কয়েক হাজার কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে যাবে। এরই মধ্যে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও এইচএসসি পরীক্ষা চলতি বছর না নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষাও চলতি বছর নেয়া হবে না। এতে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো আরো বেশি সমস্যায় পড়ছে। যার কারণে বকেয়া টিউশন ফি আদায় হবে না। চলতি বছরে বার্ষিক পরীক্ষা হবে এমন আশায় ক্ষতির মুখে পড়েও অনেক প্রতিষ্ঠান এতোদিন টিকে ছিল। এখন সেসব প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকরা সাড়া দিচ্ছেন না।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত স্থায়ীভাবেবন্ধ হয়ে গেছে ৫ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন সময় অনলাইনে অংশগ্রহণ করেছে ১০ ভাগ শিক্ষার্থী। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরিবার অনলাইন সিস্টেম সম্পর্কে প্রাথমিক কোনো ধারণা না থাকায় ক্লাসে উপস্থিতির সংখ্যা কমছে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অনেক অভিভাবক গ্রামে চলে গেছেন।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্যপরিষদ আন্দোলন করে আসছে স্কুল খুলে দিতে। তারা বলছেন, তাদের প্রণোদনা দেয়া হোক নয়তো স্কুল খুলে দেয়া হোক। এই দাবির প্রেক্ষিতে আদালতে যাবার পরিকল্পনাও করছেন তারা। এই পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, সব খুলে দেয়া হলো। কোনো শিক্ষার্থী ঘরে নেই। শিশু পার্ক খোলা, কওমি মাদ্রাসা খোলা তবে কিন্ডারগার্টেন কেন বন্ধ রাখা হচ্ছে। যদি বন্ধ রাখাই হয় তবে আমাদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হোক।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল হোসেন বলেন, কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। যদি কোনো কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আগেই আমার একটি নোটিশ করেছি, আমাদের প্রাইমারি স্কুলগুলোতে যেন তাদেরকে ভর্তি নেয়া হয়। সারা দেশে পর্যাপ্ত প্রাইমারি স্কুল আছে। রাজধানী ঢাকাতেও ২৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। শিক্ষার্থীরা সেসব স্কুলে ভর্তি হতে পারবে। যেসব শিক্ষার্থীরা গ্রামে চলে গেছে তারা কাছাকাছি সরকারি স্কুলে টিসি ছাড়া ভর্তি হতে পারবে।

মানবজমিন

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply