প্রিমিয়াম সাজেশন Premium Suggestionশিক্ষা নিউজ

পরিবেশ দূষণ রচনা ও তার প্রতিকার ২০২২

পরিবেশ দূষণ রচনা ও তার প্রতিকার ২০২২। আমরা যে পরিবেশে বাস করি তা প্রতিমুহূর্তে দূষিত হচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কলকারখানা ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। এগুলাে বেশি পরিমাণে বিষাক্ত বাম্প ও কার্বন মনােঅক্সাইড উৎপাদন করে বায়ু দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি আমরা যে ভূমিতে বিচরণ করি তাও ময়লা আবর্জনায় দূষিত। শিল্পবর্জ্য, বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ও অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থের মাধ্যমে পানি দূষিত হয়। বন-জঙ্গল ও গাছপালা কেটে ফেলা। হচ্ছে আর এভাবে পারিপার্শ্বিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। মােটরযান, উড়ােজাহাজ, গৃহস্থালির যন্ত্রপাতি ইত্যাদি থেকে শব্দ হয়।

 

এগুলাে শব্দদূষণ ঘটায়। যা অন্যান্য দূষণ থেকে কম ক্ষতিকর নয়। আমরা দূষণ থেকে পুরােপুরি মুক্ত না হতে পারলেও এটি ব্যাপক অংশে কমাতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদেরকে প্রয়ােজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমি মনে করি, দূষণ কমাতে বিভিন্ন ধরনের দূষণ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়ােজন। বেশি পরিমাণে বৃক্ষরােপণ বায়ু দূষণ কমানাের পূর্বশর্ত এবং কার্যকর পয়ঃনিষ্কাশন প্রণালিও রক্ষণাবেক্ষণ পানিদূষণ অনেকাংশে কমাতে পারে। সর্বাগ্রে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা উচিত এবং এবং রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি থেকে সৃষ্ট শব্দ সহিষ্ণু। মাত্রায় রাখা উচিত। সর্বোপরি প্রকৃতির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে দূষণ থেকে পরিবেশকে রক্ষা করার চেষ্টা করতে হবে।

ভূমিকা
পরিবেশ মানবসভ্যতার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সভ্যতার ক্রমবিকাশ থেকেই মানুষ ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছে তার পরিবেশ। মানুষের রচিত পরিবেশ তারই সভ্যতার বিবর্তনের ফসল। পরিবেশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উদ্ভিদ ও প্রাণী জীবনের বিকাশ ঘটে। তাই পরিবেশ ও মানুষের মধ্যে রয়েছে এক নিবিড় যোগসূত্র। কিন্তু দিনদিন বিশ্বজুড়ে ঘনিয়ে আসছে পরিবেশ-সংকট। মানুষের সৃষ্ট যন্ত্রসভ্যতার গোড়াপত্তন থেকেই চলছে পরিবেশের ওপর মানুষের নির্মম কুঠারাঘাত। ফলে নষ্ট হচ্ছে প্রকৃতির ভারসাম্য। পরিবেশ দূষণের মাত্রা প্রকট হওয়ার কারণে মানবসভ্যতা আজ হুমকির সম্মুখীন। এ থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে চলছে নানা গবেষণা। এ লক্ষ্যে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য জাতিসংঘ ৫ জুনকে ঘোষণা করেছে “বিশ্ব পরিবেশ দিবস” হিসেবে।

পরিবেশ দূষণ রচনা ও তার প্রতিকার ২০২২

 

পরিবেশ দূষণ কি

পরিবেশ দূষণ হল মানুষের কর্মকান্ডের ফলশ্রুতিতে পরিবেশের উপাদানে অনাকাঙ্খিত পরিবর্তন। আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তা নিয়েই আমাদের পরিবেশ। পরিবেশ কোনো একটি জীবের অস্তিত্ব বা বিকাশের ওপর ক্রিয়াশীল সামগ্রিক পারিপার্শ্বিকতা, যেমন চারপাশের ভৌত অবস্থা, জলবায়ু ও প্রভাববিস্তারকারী অন্যান জীব ও জৈব উপাদান। কোনো কারণে এই পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়াকে পরিবেশ দূষণ বলে। বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, শব্দ দূষণ, মাটি দূষণ, খাদ্য দূষণ, আর্সেনিক দূষণ, তেজস্ক্রিয় দূষণ, ওজোন গ্যাস হ্রাস, গ্রিন হাউস ইফেক্ট ইত্যাদি সবকিছুই পরিবেশ দূষণের অন্তর্ভুক্ত। বস্তুত মানব সৃষ্ট বিভিন্ন কারণই পরিবেশ দূষণের জন্যে বিশেষভাবে দায়ী।

 

পরিবেশ দূষণ সমস্যা
বিশ্ব পরিবেশের দ্রুত অবনতি হচ্ছে, বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে এ অবনতি হয়েছে আরও দ্রুত। বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন পাস হয়েছে। কিন্তু জনবিস্ফোরণ, বনাঞ্চলের অবক্ষয় ও ঘাটতি এবং শিল্প ও পরিবহ ব্যবস্থার অভাবের দরুন দেশের পরিবেশ এক জটিল অবস্থার দিকে পৌঁছতে যাচ্ছে। মানুষ নিজের প্রয়োজনে প্রকৃতিকে যেমন কাজে লাগাচ্ছে বা প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যবহার করছে, প্রকৃতিও তেমনি আহত রূপ নিয়ে মানুষের তথা সমগ্র প্রানপুঞ্জের ঠিক সমপরিমাণ বিরোধিতা করতে তৎপর। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানের বিজয় গৌরবে মোহান্ধ মানুষ পৃথিবীর পরিবেশকে বিষাক্ত করেছে। আজও করছে। ছড়িয়ে দিচ্ছে ক্ষতিকর সব আবর্জনা। তার ফল হয়েছে বিষময়। পরিবেশ দূষিত হয়েছে। আর দূষিত পরিবেশ প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। তাই গোটা জীবজগতের অস্তিত্বই আজ বিপন্ন। বর্তমানে পরিবেশ দূষণ মানবসভ্যতার জন্যে বিরাট হুমকি স্বরূপ। এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট পরিবেশবিজ্ঞানী Peter Walliston এর উক্তিটি প্রণিধানযোগ্য ঃ

 

পরিবেশ দূষণের কারণ
বিভিন্ন কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। তম্মধ্যে প্রধান কয়েকটি কারণ নিন্মরূপঃ
জনসংখ্যা বৃদ্ধি
অপরিকল্পিত নগরায়ন
বনভূমির অপরিকল্পিত ব্যবহার
প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার
দ্রুত শিল্পায়ন
সার ও কীটনাশকের ব্যবহার
বনভূমি উজাড়
কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ
গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়া
ওজোন স্তরের ক্রমাবনতি
অ্যাসিড বৃষ্টি
অপরিকল্পিত গৃহ নির্মাণ
দারিদ্র
প্রসাধন সামগ্রী
প্লাস্টিক ইত্যাদি।

বায়ু দূষণ ও বায় দূষণের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া
আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের অন্যতম সভার হলাে বায়ু। সেই বায়ু-দূষণ আজ বিশ্ব জুড়ে। কার্বন কণা থেকে ভারী ধাতু, জটিল জৈব যৌগ নিউক্লীয় আবর্জনা, জীবাশ্ম জ্বালানি অথাৎ তেল, কয়লা ইত্যাদি পুড়িয়ে কার্বন ডাই-অক্সাইড বাতাসে ছড়িয়ে দেওয়া, ক্লোরােফ্লুরােমিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, আলােক রাসায়নিক ধোঁয়াশা ইত্যাদি সবই হলাে বায়ু দূষণের প্রধান উপকরণ। তাছাড়া বায়ুদূষণের মূলে আছে কলকারখানা, মোটর গাড়ি, ট্রেন, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের উত্তাপ সৃষ্টির যন্ত্রপাতি এবং নানান আবর্জনা। বিভিন্ন অক্সাইড বাতাসের জলীয় বাষ্পের সঙ্গে মিশে তৈরি করে সালফার এবং নাইট্রোজেনের অম্ল। এই অম্ল পরে নিচে নেমে এসে পানি ও মাটির সঙ্গে মিশে যায়। এরই নাম ‘অ্যাসিড রেইন’ বা অম্লবর্ষণ। সাম্প্রতিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, এসব গ্যাস ১০০০ কিলােমিটার কিংবা তার চেয়েও বেশি দূরত্ব অতিক্রম করে এবং জল ও স্থলভাগের বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে। এর ফলে মাটি, নদী ও হ্রদ ইত্যাদির পানিতে অম্নের পরিমাণ বাড়ে, জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বায়ু-দূষণের আর একটি দিক হলাে ভূ-পৃষ্ঠের ঊর্ধ্বাকাশে স্ট্রাটোস্ফিয়ারে ভাসমান কণার পরিমাণ বৃদ্ধি। এসব কণার মধ্যে ধূলিকণা থেকে শুরু করে কলকারখানা থেকে নির্গত নানা প্রকার রাসায়নিক কণাও থাকে। উর্ধ্বাকাশে এই সব ভাসমান বস্তুকণার সঙ্গে জলীয় বাষ্প মিশে গড়ে ওঠে বৃষ্টি-বিন্দু। এর ফলে অকাল বর্ষণ এবং বর্ষণের সঙ্গে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে। কুয়াশা আর তেল, কয়লা দহনের ফলে নির্গত গ্যাসের মিশ্রণে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে। তার ক্ষতিকারক ক্ষমতা মারাত্মক। মাথাধরা, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, দীর্ঘস্থায়ী ব্রংকাইটিস, ফুসফুস ক্যান্সার এ জাতীয় দূষণের ফল।

পরিবেশ দূষণ রচনা ও তার প্রতিকার ২০২২

বায়ু দূষণের বিপর্যয় সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, বায়ুতে যদি কার্বন ডাই-অক্সাইড ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে আর তার ফলে পৃথিবীর উত্তর গােলার্ধের গড় তাপমাত্রা যদি ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পায় তাহলে উত্তর সাগরের বরফ গলে উঁচু হয়ে উঠবেসাগরের পানি। আর বহু কোটি টন কয়লার ধোঁয়া আর ধুলােবালি যদি প্রাণদায়ী সূর্যালােককে পৃথিবীতে পৌছতে বাধা দেয় তবে তার ফল হবে আরও ভয়াবহ। যদি এ কারণে পৃথিবীতে আলাে আসার পরিমাণ ১.৫% থেকে ২%ও কমে যায় তাহলে কমে মেরু অঞ্চলের চিরস্থায়ী বরফ ছড়িয়ে পড়বে বিষুব অঞ্চল পর্যন্ত। এতে জাপান, মায়ানমার, বাংলাদেশসহ অনেক সমুদ্র তীরবর্তী দেশ চিরতরে পানির নিচে তলিয়ে যাবে। একে বলে গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া।

 

বাংলাদেশে বায়ু দূষণের বিভিন্ন কারণ

বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালানি দহন ছাড়াও বায়ুদূষণের অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে ইটের ভাটা, সার কারখানা, চিনি, কাগজ, পাট ও বস্ত্র কারখানা, সুতা কল, চামড়া শিল্প, পােশাক শিল্প, বিস্কুট তৈরির কারখানা, রাসায়নিক ও ঔষধ তৈরি শিল্প, সিমেন্ট উৎপাদন, গ্রিল ও দরজা-জনালার ওয়ার্কশপ, জমির ধুলাবালি, ইত্যাদি উৎস থেকে প্রচুর পরিমাণে ধোঁয়া, বাম্প, গ্যাস ও ধূলিকণা ইত্যাদি বাতাসে মেশার ফলে পরিবেশ দূষিত হয়।

পানি দূষণ ও পানি দূষণের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া


পানি-দূষণ অগ্রসরমান সভ্যতার আর এক অভিশাপ। পৃথিবীর সমুদ্র নদ-নদী, পুকুর, খাল-বিল ইত্যাদির জল নানাভাবে দূষিত হচ্ছে। ভারী ধাতু, হ্যালােজেন নিষিক্ত হাইড্রোকার্বন, কার্বন ডাই-অক্সাইড, পেট্রোলিয়াম, কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা, সর্বোপরি সংলগ্ন শহরের নির্গমনালি বেয়ে আসা দূষিত তরল, আবর্জনা এগলােই হলাে সমুদ্র দূষণের কারণ। পানির উৎস হিসেবে যে-সব নদীর পানি ব্যবহৃত হয়, কোনাে কোনাে সময় সে সবের মধ্যে প্রায় শতকরা ৫০ ভাগ পর্যন্ত দূষিত তরল পদার্থ বা পরিত্যক্ত পানি থাকে। নদীর তীরে গড়ে উঠেছে সমৃদ্ধ জনপদ শহর। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আধুনিক চটকল, কাপড় কল, চিনি কল, কাগজের কল, ভেষজ তেলের ইত্যাদি। এইসব কলকারখানার আবর্জনা প্রতিনিয়ত নদনদীর পানিকে দূষিত করছে। দ্রুত শিল্পায়ন বিভিন্ন দেশের পানি সরবরাহের এবং আবর্জনা-নিক্ষেপের সমস্যাকে ক্রমশ জটিল করে তুলেছে। উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশগুলােতে দেখা দিচ্ছে গৃহকার্যে ব্যবহৃত ময়লা পানিকে শােধন করে পুনরায় তা ব্যবহারযােগ্য করে তােলার প্রয়ােজনীয়তা। কিন্তু পরিশ্রুতকরণ ব্যবস্থায় সামান্যতম ত্রুটি থাকলে এ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে গুরুতর রকমের সংক্রমণ ঘটতে পারে। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালকে “ইন্টারন্যাশনাল ড্রিংকিং ওয়াটার সাপ্লাই এন্ড স্যানিটেশন” দশক হিসেবে পালন করার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। কার্যত এ উদ্যোগ নানা কারণ ব্যাহত হয়ে চলেছে।

বাংলাদেশে পানি দূষণের বিভিন্ন কারণ

শিল্প ও পৌর বর্জ্য বাংলাদেশের নদী ও জলাশয়গুলােকে দূষিত করছে। পরিবেশ অধিদপ্তর উল্লেখ করেছে যে চট্টগ্রামের টিএসপি সারকারখানা থেকে সালফিউরিক ও ফসফরিক অ্যাসিড এবং চন্দ্রঘােনার কর্ণফুলি কাগজের মিল, সিলেট কাগজ মিল, দর্শনার কেরু অ্যান্ড কোম্পানি, খুলনার (Khulna) শিপইয়ার্ড ও মাছ-প্রক্রিয়াকরণ কারখানা, ঢাকার (Dhaka)অলিম্পিক ও কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলস লক্ষ লক্ষ গেলন তরল বর্জ্য পার্শ্ববর্তী নদী ও জলাশয়ে নিক্ষেপ করে পানি দূষণ ঘটাচ্ছে। চট্টগ্রামের (Chittagong) কালুরঘাট, নাসিরাবাদ, পতেঙ্গা, কাপ্তাই, ভাটিয়ারি, বাড়বকুণ্ড, ফৌজদারহাট ও ষােলশহরের প্রায় ১৪০টিরও বেশি শিল্পকারখানার বর্জ্য কর্ণফুলি নদী ও বঙ্গোপসাগরে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে।

ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর (Buriganga River) পানি পােস্তগােলা ও ফতুল্লার ৫৩টি কারখানা এবং হাজারীবাগের ১৫১টি চামড়া শিল্প দ্বারা দূষিত হচ্ছে। অন্তত ২৯টি শিল্পকারখানার বর্জ্য টঙ্গী (Tongi) অঞ্চলের তুরাগ নদী এবং ৪২টি বৃহৎ শিল্প শীতলক্ষ্যা নদীতে বর্জ্য নিক্ষেপ করছে। খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল ঘণ্টায় প্রায় ৪,৫০০ ঘনমিটার বর্জ্যমিশ্রিত পানি ভৈরব নদীতে ফেলে। গঙ্গা (Ganges) ভারত (India) থেকে প্রায় ৮,৬২,০০০ বর্গ কিলােমিটার বিস্তৃত গঙ্গা অববাহিকায় বর্জ্য নিয়ে আসে। তীরবর্তী ৭০০ শহরের প্রায় ১২০ কোটি লিটার বর্জ্য প্রতিদিন গঙ্গা নদীর প্রবাহে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে এবং ভাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশের (Bangladesh) মানুষ সেই দূষিত পানি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছে। ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভে ও বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত হয় যে বাংলাদেশে ১.৮৫ থেকে ২.২৭ কোটি মানুষ ভূগর্ভস্থ আর্সেনিক দূষণযুক্ত পানি ব্যবহার করছে।

 

শব্দদূষণ ও শব্দদূষণের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া
বর্তমান যুগের এক গুরুতর সমস্যা হচ্ছে শব্দদূষণ। শহরাঞ্চলে শব্দ – দূষণের মূল উৎসগুলাে হচ্ছে- মোটর গাড়ির হর্ন, বাজি ও পটকার আওয়াজ, রেডিও-টেলিভিশনের আওয়াজ, মাইকের আওয়াজ, কলকারখানার শব্দ ইত্যাদি। শব্দদূষণের পরিণাম শ্রবণেন্দ্রিয় অকেজো হয়ে যাওয়া, হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া, স্নায়ুতন্ত্রের ওপর চাপ পড়ে অনিদ্রা এবং নানা প্রকার স্নায়ুরােগের সৃষ্টি হওয়া। এছাড়া, কলকারখানার আশেপাশের স্থায়ী বাসিন্দাদের শিশু-সন্তানরা কম-বেশি বধির হতে দেখা যায়।

বাংলাদেশে শব্দ দূষণের বিভিন্ন কারণ
শব্দ দূষণের প্রকোপ বাংলাদেশের জন্য এক সুদূরপ্রসারী পরিণতিবহ সমস্যা হয়ে উঠছে। গাড়ির হর্ন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কোনাে ট্রাফিক আইন না থাকায় শহরের অনেক অংশে শব্দসমস্যা অত্যন্ত তীব্র আকার ধারণ করছে।

বাংলাদেশে শব্দ দূষণের বিভিন্ন কারণ
শব্দ দূষণের প্রকোপ বাংলাদেশের জন্য এক সুদূরপ্রসারী পরিণতিবহ সমস্যা হয়ে উঠছে। গাড়ির হর্ন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কোনাে ট্রাফিক আইন না থাকায় শহরের অনেক অংশে শব্দসমস্যা অত্যন্ত তীব্র আকার ধারণ করছে।

মৃত্তিকাজনিত দূষণ
মৃত্তিকা বা মাটি ভূত্বকের উপরিভাগের একটি পাতলা আবরণ। বিভিন্ন কারণে মৃত্তিকা দূষণ ঘটে। যেমন, ভূমিক্ষয়, বায়ু প্রবাহ, বৃষ্টি, গাছকাটা, বন উজাড়, জমিতে অতিরিক্ত বা নিয়মিত রাসায়নিক সার ব্যবহার করা ইত্যাদি কারণে মাটির গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়, ফলে মৃত্তিকা দূষণ ঘটে।

তেজস্ক্রিয়তাজনিত দূষণ
তেজস্ক্রিয়তাজনিত দূষণ মানুষের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর এক ধরনের অদৃশ্য দূষণ। তেজস্ক্রিয়তার উৎস সূর্য ও মহাশূন্য যেখান থেকে তা পৃথিবীতে পৌছায়। ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয়তার অধিকাংশ বিকিরিত হয় বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থ, বিশেষত পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণ, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক সামগ্রী থেকে। এগুলাের মধ্যে উল্লেখযােগ্য লেজার রশ্মি, এক্সরে মেশিন, রঙিন টেলিভিশন সেট, মাইক্রো ওয়েভ ওভেন ইত্যাদি। অধুনা পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের ফলে সৃষ্ট দূষণ বিশ্বব্যাপী মানুষের আতঙ্ক ও উদ্বেগের কারণ হয়েছে।

প্রতিকার ও বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপপরিবেশ দূষণ রােধ করার জন্যে সারাবিশ্ব সচেতন হয়ে উঠেছে। পরিবেশ দূষণের ফলে বিশ্বের বিভিন্নস্থানে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে দূষণ রােধ করার প্রচেষ্টা চলেছে। আমাদের দেশে এ ব্যাপারে সচেতনতার সৃষ্টি হচ্ছে। সরকার এ ব্যাপারে বিভিন্ন ব্যবস্থা ও কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। যেমন :
পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ (২০০২) ঘােষণা ও আইন করা হয়েছে।

টু-স্ট্রোক যানবাহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব যানবাহনের নির্গত ধোঁয়ায় কার্বন-ডাইঅক্সাইড, সিসা, কার্বন এ মনােঅক্সাইডসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছিল।
পরিবেশ দূষণরােধে সিএনজি জ্বালানির ব্যবহার আরম্ভ করেছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ যানবাহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বনায়ন কর্মসূচির ব্যাপক সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
পরিবেশ আদালত গঠন করা হয়েছে।

পরিবেশ দূষণ রােধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়ােজন

পরিবেশ দূষণ রােধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়ােজন তার কয়েকটি দিক নিচে তুলে ধরা হল
পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।
পরিবেশ রক্ষার জন্য দেশে মােট আয়তনের শতকরা ২৫% বনভূমি থাকা প্রয়ােজন একথা নিশ্চয়ই কারাে অজানা নয়। কিন্তু আমাদের দেশে সরকারি হিসেব অনুযায়ী ১৬% বনভূমির কথা বলা হলেও প্রকৃতপ্রস্তাবে বনভূমির পরিমাণ রয়েছে মাত্র ৯%। সুতরাং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্যে আমাদের এ মুহূর্তে দেশের মােট আয়তনের ৩০% বনভূমি করা প্রয়ােজন।
বিকল্প জ্বালানি হিসেবে সৌর ও পানি বিদ্যুতের মতাে উৎস ব্যবহার করতে হবে। বনভূমি উজাড়করণ এবং নির্দিষ্ট সময়ের আগে গাছকাটা নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
শিল্প-কারখানা, গৃহস্থালি ইত্যাদির বর্জ্য পদার্থ নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে। এবং পরবর্তীকালে তা সরকারিভাবে পরিশােধনের ব্যবস্থা করতে হবে।
কৃষিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে।

উপসংহার

পরিবেশদূষণ জাতির জন্য এক মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এ ব্যাপারে সারা বিশ্বের মানুষের সচেতনতার মানসিকতা একান্ত অপরিহার্য। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এ সমস্যা আরো প্রকট। তবে দেশ ও জাতির স্বার্থে এর মােকাবেলা অত্যাবশ্যক। এ লক্ষ্যেই কবি সুকান্তের (Sukanta Bhattacharya) কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই
এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান,
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে,
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব-তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযােগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।

 

Creating environmental pollution and its remedies 2022. The environment we live in is getting polluted every moment. With the increase in population, the number of factories and vehicles is increasing. They cause air pollution by producing more toxic bumps and carbon monoxide. Even the land on which we roam is contaminated with dirty garbage. Water is contaminated with industrial waste, toxic chemicals, and other harmful substances. Cutting down forests and trees. And in this way, the balance around is being disturbed. Sounds come from jetties, airplanes, household appliances, etc.

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply