ক্যারিয়ারজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়বিসিএস

বিসিএস অনিশ্চিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাখ পরীক্ষার্থীর!

করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। সরকারের সিদ্ধান্ত মােতাবেক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা স্থগিত ঘােষণা করেছে। আবারও পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় মারাত্মক সংকটে পড়লো সারাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষার্থীরা।

আর মাত্র একটি বা দুটি পরীক্ষা শেষ হলেই কাঙ্খিত ৪৪তম বিসিএস পরীক্ষায় এ্যাপিয়ার্ড হিসেবে আবেদনের সুযোগ পেতেন কয়েক লাখ শিক্ষার্থী। বিসিএসে আবেদনের শেষ দিন ৩১ জানুয়ারীর অন্তত তিন দিন আগেই শেষ হওয়ার কথা ছিল চতুর্থ বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা। তবে গত শুক্রবার পরীক্ষাগুলো স্থগিতের ঘোষণায় আসন্ন বিসিএস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা আসে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মো. আতাউর রহমানের স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে।

জানা গেছে, প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকলেও সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সারাদেশের কলেজগুলোতে। কেবল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েই চতুর্থ বর্ষে ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল দুই লাখ ৩৭ হাজার পরীক্ষার্থীর। যারা পরীক্ষা শেষ হলেই ৩১ জানুয়ারীর মধ্যে ৪৪ বিসিএসে আবেদন করার সুযোগ পেতেন।

আগেই শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর ৪৪ বিসিএসের আবেদনের দিনক্ষণ ঠিক করেছিল পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। এখন করোনার কারনে পরীক্ষা বন্ধে নতুন জটিলতার সৃষ্টি হলো।

তাহলে এখন কি হবে ফাইনাল পরীক্ষা আটকে যাওয়া শিক্ষার্থীদের? এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশার কথা তুলে ধরছেন চাকরিপ্রার্থীরা। বিষয়টি নজরে আনলে পিএসসির চেয়ারম্যান মো: সোহরাব হোসাইন বলেছেন, বিষয়টি গুরুত্বপূর্ন। তবে এখনোতো সময় আছে, আলোচনায় বিষয়টি নিয়ে ইউজিসির পক্ষ থেকে প্রস্তাব আসলে অবশ্যই বৃহত্তর স্বার্থের কথা চিন্তা করেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আগেও আমরা শিক্ষার্থীদের জন্যই অন্তত তিনবার পরীক্ষা পিছিয়েছি।’

অন্যদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান বলেছেন, পিএসসির চেয়ারম্যান পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। তার পরেও আমি উপাচার্যের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই আলোচনা করব, যেন তাঁর পক্ষ থেকে পিএসসির কাছে শিক্ষার্থীদের জন্য একটা প্রস্তাব যায়।

এদিকে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরীক্ষা স্থগিত নয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা দিতে চাই এমন দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা ও সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয় কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা শেষ না হলে তারা বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে না এতে তাদের ক্যারিয়ার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা সরকারের কাছে দাবি জানান স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলেও তাদের পরীক্ষাটা যেন নেওয়া হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীবৃন্দ বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে চাই এতে অন্তত যাই হোক আমাদের পরীক্ষাটা অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ কর্মসূচিতে শহরের বেশ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা পরীক্ষাগুলো দিতে চাই। এর আগে করোনার কারণে দুই বছর আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। আমরা চাই না জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের আর এইভাবে হয়রানি করুক। যেভাবে রুটিন করা হয়েছিল সেই অনুযায়ী আমাদের পরবর্তী পরীক্ষাগুলো নেওয়া হোক।

এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের দাবি একটাই স্বাস্থবিধি মেনে আমাদের চলমান পরীক্ষাগুলো নিতে হবে। আমাদের আর তিনটা পরীক্ষা আছে এই সময় আমাদের পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটা ঠিক নয়। সবকিছু যেমন খোলা আছে সুতরাং আমাদের পরীক্ষাগুলো নেওয়া হোক। আমরা আর এইভাবে বাবা মায়ের বোঝা হয়ে থাকতে চাই না।

প্রসঙ্গত, দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধসহ বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে করা হয়েছে। তবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের মত করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। এরপরেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা স্থগিত করেছে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *