জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়পরীক্ষা খবর

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত পরীক্ষার কী হবে, শঙ্কায় ২৯ লাখ শিক্ষার্থী

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত পরীক্ষার কী হবে । করোনা কারণে পিইসি-ইইসি, জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এইচএসসির মতো গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষাও না নিয়ে ফল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীকে অটোপাস দেয়া হচ্ছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত পরীক্ষাগুলোর কী হবে। এই তিনটি পরীক্ষার আদলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়েও নতুন করে ভাবার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন- অটোপাসের দাবি নিয়ে যা বললেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য

 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্সে ২৯ লাখ ১০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি ও বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের চাকরির বয়স নিয়েও শঙ্কিত। এ কারণেই বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতিতে শিক্ষাজীবন এগিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

অনার্স ৪র্থ, মাস্টার্স শেষ পর্ব সহ প্রফেশনাল কোর্সের যারা পরীক্ষা শেষে চাকরির জন্য অপেক্ষা করছিল তারাও রয়েছে নানা শঙ্কায়। পরীক্ষা কবে হবে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি জানুয়ারিতেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা যায় তবুও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরীক্ষা জট কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত পরীক্ষার কী হবে, শঙ্কায় ২৯ লাখ শিক্ষার্থী

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, করোনা মহামারির কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে কোনো ধরনের লেখাপড়ার মধ্যে নেই। করোনা সময় খেয়ে ফেলছে তাদের। যারা পরীক্ষার প্রস্তুতি শেষ করেছে তারাও পরীক্ষা দিতে পারছে না; ফলে অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। লেখাপড়া নেই, পরীক্ষা নেই। এদিকে পেরিয়ে যাচ্ছে বয়স। তাই এই স্তরের শিক্ষার্থীদেরও বিকল্প মূল্যায়নের মাধ্যমে পরবর্তী স্তরে উত্তীর্ণ করা উচিত, যাতে পড়াশোনার মধ্যে থাকে। না হলে তরুণ সমাজের বিপথে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার্থীরা বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতিতে সনদ দেওয়ার দাবি তুলেছেন। চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা মার্চেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলতি বছরের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বেশির ভাগ বিষয়ের পরীক্ষা শেষ হলেও করোনা মহামারির কারণে দুটি থেকে পাঁচটি বিষয়ের পরীক্ষা আটকে যায়। তখন থেকেই অপেক্ষায় রয়েছেন তারা; কবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

আরো পড়ুন- এইচএসসির নিয়মে ফল প্রকাশের দাবি অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের

এর আগে অটোপাশের দাবিতে সম্প্রতি গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠিত অনার্স চতুর্থ বর্ষের (সম্মান) পাঁচটি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে পুরো পরীক্ষার ফল প্রকাশের দাবিও জানিয়েছেন তারা। যদিও অটোপাসের কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ।

শিক্ষাবিদ ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একই নিয়ম। এইচএসসির মতো উচ্চ স্তরে স্বয়ংক্রিয় পাস বা বিকল্প মূল্যায়নের সুযোগ নেই। প্রয়োজনে অনলাইনে হলেও এই পরীক্ষা নিয়ে নেওয়া উচিত।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, অটোপাসের বিষয়টি এখনো ভাবা হচ্ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার এক দুই সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া যাবে। সব প্রস্তুতি রয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হলে সেটা ভিন্ন কথা। এই স্তরের শিক্ষায় স্বয়ংক্রিয় পাস দেওয়া ঠিক হবে না।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সমূহ কবে নাগাদ হবে এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বলেছেন, আমরা কলেজ খোলার অপেক্ষায় আছি। কলেজ চালু হলেই স্থগিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। নতুন সূচিও দেওয়া হবে। একই দিনে একাধিক বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে পরীক্ষা জট কমিয়ে ফেলার চিন্তা রয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্রাশ প্রোগ্রাম করে ওভারকাম করার আভাস দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ বলেছেন, ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলব, তারা যেন বাড়িতে বসে পড়ালেখা করে। এজন্য যে, এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠার পর আমরা একের পর এক পরীক্ষা নিতে থাকব। আগে যেমন আমরা ক্রাশ প্রোগ্রাম করে ওভারকাম করেছি, সেই রকম মেথড এখানেও এপ্লাই করতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সেশনজট কমানোর জন্য ২০১৪ সালে একবার ক্রাশ প্রোগ্রাম নেওয়া হয়। এ কারণে শিক্ষাবর্ষ ১ বছরের স্থলে ৮ মাস হয়েছিল। সেজশজট নিরসনের জন্য দ্রুত ফরম পূরণ, পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশের উদ্যোগের নাম ক্রাশ প্রোগ্রাম। পাঠদান ও শিক্ষাগ্রহণ বড় বিষয় নয়, পরীক্ষা নিয়ে সেশনজট কমানোই ছিল ঐ প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য।

আরো পড়ুন- পরীক্ষা না দিয়ে অটোপ্রমোশনের কোন সুযোগ নেই: উপাচার্য

অক্টোবর পর্যন্ত ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষ, মাস্টার্স ফাইনাল, মাস্টার্স প্রিলিমিনারি, অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। প্রতিটি বর্ষের ৩১টি বিষয়ে পরীক্ষা রয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে এসব পরীক্ষার সূচিও করা যায়নি। অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা অর্ধেক হবার পর বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠান। আটকে আছে ৩য় বর্ষের ব্যবহারিক পরীক্ষাও। এছাড়াও বিভিন্ন প্রফেসনাল কোর্সের পরীক্ষাসহ চার শতাধিক পরীক্ষা আটকে আছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স, মাস্টার্স, প্রফেশনাল কোর্স মিলে প্রায় ২৯ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। দেশের স্নাতক পর্যায়ের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২ হাজার ৩০০ কলেজে পড়ছেন। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সম্মান পড়ানো হয় ৭৯৭ টি কলেজে। ১৫৭ টি কলেজে মাস্টার্স শেষ পর্ব পড়ানো হয়।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply