নিয়ম ভঙ্গ করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি আছে। আমরা অনেক নজরদারি করতে পারি, কিন্তু তারা যদি সচেতন না হন, নিয়ম না মানার প্রবণতা থাকে এবং ধারাবাহিকভাবে নিয়ম ভঙ্গ করেন, তাহলে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে। মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর ইডেন কলেজে ভবন উদ্বোধন ও মৎস্য পোনা অবমুক্তকালে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আরো পড়ুন- ২৭ সেপ্টেম্বরের পর খুলবে বিশ্ববিদ্যালয়
মাদরাসাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা কমের বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি আছে। প্রতিদিন প্রতিবেদন সংগ্রহ করছি। স্থানীয় পর্যায়ে একটি নজরদারি আছে। তবে বিষয়টি যারা প্রতিষ্ঠান চালান তাদের ওপর নির্ভর করে। আমরা অনেক নজরদারি করতে পারি, কিন্তু তারা যদি সচেতন না হন, নিয়ম না মানার প্রবণতা থাকে এবং ধারাবাহিকভাবে নিয়ম ভঙ্গ করেন, তাহলে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে। তার কারণ হচ্ছে আমরা এ ঝুঁকি নেব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা স্কুল বা মাদরাসায় ছড়ায় তাহলে সেটি কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠানে সীমাবদ্ধ থাকবে না সেটি কমিউনিটিতে ছড়াবে। কারণ আমরা সেই ঝুঁকি নিতে পারি না। কাজেই সেই প্রতিষ্ঠান যে পর্যায়ের হোক মাদারাসা, কারিগরি প্রাথমিক মাধ্যমিক সেখানে যদি কোনো অবহেলা থাকে তাহলে সেটি আমরা ঠিক করার চেষ্টা করবো। কেউ যদি বারবার নিয়ম ভঙ্গ বা অবহেলা করে তাহলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এখনও অনেক ইংরেজি মাধ্যম প্রতিষ্ঠান না খোলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্দেশনা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য। এখানে বাংলা, ইংরেজি মাধ্যম ভাগ নেই। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি না খুলে থাকেন তাহলে আমাদের জানাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষক কর্মচারীদের অধিকাংশের টিকা নেওয়া হয়ে গেছে। এখন আমাদের উপাচার্যদের যে অভিমত সেটি হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা যদি অন্ততপক্ষে একটি ডোজ টিকা নিতে পারে, সেখানে হল খোলা অনেক সহজ হবে। কিন্ত সেজন্য তো রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যাদের এনআইডি রয়েছে, তাদের অনেকে রেজিস্ট্রেশন করেননি তাদের আমরা বলবো তারা দ্রুত রেজিস্ট্রেশন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা নিয়ে নিতে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আর যাদের এনআইডি নেই, তারা জন্মসনদ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। আর যদি জন্মসনদ না থাকে তাহলে সেটি করে নেওয়া খুবই সহজ, কাজেই সেটি তারা করে নেবে। দুদিনের মধ্যে ইউজিসি থেকে একটি লিংক দেওয়া হবে। যে লিংকে তারা জন্মসনদ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে তারপর তারা সুরক্ষা অ্যাপে যেন রেজিস্ট্রেশন করে। তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিয়ে দেওয়া হবে।
দ্রুত সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে টিকা গ্রহণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, রেজিস্ট্রেশনের পরে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারেন। কারণ তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মেডিক্যাল সেন্টারগুলো রয়েছে, সেগুলো টিকাকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সেখানে তাদের টেকনিক্যাল সহায়তা দেবে এবং টিকা সরবরাহ করবে।
আরো পড়ুন- ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হবে
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বৈঠক করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের পর নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে টিকার জন্য নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া যেসব শিক্ষার্থী টিকা নিতে পারেননি তাদের জন্য একটি লিংক তৈরি করে শিক্ষার্থীদের মোবাইল নম্বরে পাঠাবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।