পরীক্ষা খবরশিক্ষা নিউজ

ক্লাস নয়, পরীক্ষা নিয়ে চিন্তিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়

ক্লাস নয়, পরীক্ষা নিয়ে চিন্তিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়। করোনার কারণে টানা বন্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হচ্ছে না কোনো ক্লাস, পরীক্ষা। ঘরে থাকা স্কুল শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে টেলিভিশনে পাঠদান চললেও কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা রয়েছেন হাত গুটিয়ে। কোচিং সেন্টার বন্ধ, বাড়িতেও গৃহশিক্ষকের আসা বন্ধ রয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা চালিয়ে যেতে চাইলেও পরীক্ষার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের সঙ্গে সরকারের দেন-দরবার চলছে। সময়মতো সেমিস্টার পরীক্ষা দিতে না পারলে আর্থিক ক্ষতির শিকার হবেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও সেশনজটে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

শিক্ষা খাতের নীতিনির্ধারক ও অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার বলে মনে করছেন তারা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন মনে করেন, টেলিভিশন ও অনলাইনে পাঠদান চালিয়ে নেওয়া গেলেও পরীক্ষা নেওয়া দুঃসাধ্য। আসলে ক্লাস নয়, পরীক্ষা নেওয়া নিয়েই সবচেয়ে বড় ভাবনা। ঢাকা ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরাও একই অভিমত দেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক সমকালকে বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘমেয়াদি বন্ধ শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করার প্রধান অন্তরায়। আর সিলেবাস শেষ না হলে বছর শেষে জেএসসি, জেডিসি, প্রাথমিক সমাপনীসহ কোনো পরীক্ষাই নেওয়া যাবে না। এমনকি বার্ষিক পরীক্ষাও হুমকির মুখে পড়বে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহা. মোকবুল হোসেন বলেন, বছরে চারটি বড় পাবলিক পরীক্ষা বোর্ডগুলো নেয়। এ বছরের এইচএসসি, জেএসসি, জেডিসি নিয়ে করোনার কারণে বড় ধরনের বিপাকে পড়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।

ক্লাস নয়, পরীক্ষা নিয়ে চিন্তিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়

রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম সমকালকে বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থীরা এখনও ফল পায়নি। ফল প্রকাশ না হলে আমরা একাদশ শ্রেণির ভর্তি শুরু করতে পারব না। আবার এইচএসসি পরীক্ষার্থীরাও প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছে, পরীক্ষা দিতে পারছে না। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিও এ বছর পিছিয়ে যাবে। তিনি বলেন, যদি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক এবং মাধ্যমিকের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া কোনো পথ খোলা থাকবে না। স্কুল খোলার পর পাঠদান বাড়ানোর জন্য ঐচ্ছিক ছুটি কমানো এবং সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার দরকার হবে।
ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক এ বিষয়ে বলেন, স্কুলের সাময়িক বা বার্ষিক পরীক্ষা কোনোভাবে সামলে নিতে পারবে স্কুলগুলো। কিন্তু পড়াশোনা না করতে পারলে, স্কুলে পাঠদান না হলে, আগামী জেএসসি, ২০২১ সালের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েই বড় সমস্যা তৈরি হবে।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সিলেবাস শেষ করার একটি পন্থা হতে পারে এমন- স্বাস্থ্যবিধি মেনে সপ্তাহের একদিন একটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ডাকা যেতে পারে। ওইদিন শুধু ওই ক্লাসের শিক্ষার্থীরাই স্কুলে আসবে। পুরো সপ্তাহের পড়াটা ওইদিন শিক্ষার্থীদের দিয়ে দিতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, এ বছরের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা কীভাবে নেওয়া যায় সেটা নিয়ে তারা ভাবছেন।

অন্যদিকে সমস্যায় পড়েছে উচ্চশিক্ষাও। কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে সেমিস্টারের পাঠদান শেষ করেছে। ইউজিসির বাধ্যবাধকতা থাকায় অনলাইনে পরীক্ষা নিতে পারছে না। এমনকি পরবর্তী সেমিস্টারও শুরু করতে পারছে না। এ বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, করোনার এই পরিস্থিতিতে বিকল্প পন্থায় লেখাপড়া চালিয়ে নিতে হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদিও এই প্রক্রিয়াটি আরও আগেই শুরু করেছিল, কিন্তু কিছু জটিলতার কারণে তা চালু রাখা যায়নি।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, পড়াশোনার স্থবিরতা কাটাতে সরকার এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে এখনই কাজ শুরু করতে হবে। তিনি বলেন, ১৬ মার্চ একযোগে সব প্রতিষ্ঠান ছুটি দেওয়ার আগে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের ভর্তি কার্যক্রমই শেষ করতে পারেনি।

কলেজ শিক্ষক সমিতির (বাকশিস) মহাসম্পাদক প্রফেসর ড. এ কে এম আবদুল্লাহ বলেন, পাবলিক পরীক্ষার মতো বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিশেষ করে পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ এই ছুটির মধ্যে শিক্ষকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসতে হবে। স্কুলগুলোকে নিজেদের উদ্যোগে পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে তাদের নিয়মিত পড়াশোনার তত্ত্বাবধান করতে হবে। পাবলিক পরীক্ষার বাইরে থাকা ক্লাসগুলোকে নিজস্ব মূল্যায়ন পদ্ধতির আলোকে প্রমোশন দিতে হবে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *