কবে খুলবে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়?
কবে খুলবে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়? করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে নানা ধরণের ঘোষণা আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইন ক্লাস নেয়া ছাড়া এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট আর কোন নির্দেশনা নেই। ফলে সেশনজটসহ শিক্ষাজীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, আবাসিক হলসহ শ্রেণিকক্ষে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তাদের সামনে। আর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানালেন ইউজিসি।
এক শিক্ষার্থী বলেন, একটা লম্বা সময় আমাদের শিক্ষা জীবন থেকে চলে গেছে। আমরা ক্লাস করতে পারিনি, পরীক্ষাগুলো দিতে পারিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার জন্য আমরা যখন ভাবব তখন অনেকগুলো বিষয় বিবেচনায় রেখে তারপর আমাদের সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিক সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, যদি কোন সময় কোন কিছু করতে হয় যতটুকু পারব আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেটা করব।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খোলার কোনো সম্ভাবনা নেই। এক্ষেত্রে দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৩৭টি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৯১টি যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখের বেশি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে ২৮ লাখের মত শিক্ষার্থী।
এদিকে কলেজে একাদশ শ্রেণীর ভর্তি শুরু হয়েছে এবং অনলাইনে ক্লাস শুরু হবে আগামী অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে।
যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং সরকার যদি মনে করে যে বাচ্চারা এখন নিরাপদ, তারা স্কুলে গেলে কোনো সমস্যা হবে না, তবেই স্কুল খুলবে। কিন্তু স্কুল খোলা সম্ভব না হলে প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ষষ্ঠ শ্রেণিতে উন্নীতের জন্য সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সনদ দেবেন বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্কুল খোলার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এ বছর স্কুল খোলা সম্ভব না হলে অটো পাস দেয়া হতে পারে-এ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, সেটা সময় বলে দেবে। আমরা যদি স্কুল না খুলি তাহলেও তো বাচ্চাদের পরবর্তী ধাপে (ক্লাসে) দিতে হবে। আমি সব সময় বলি, এক ক্লাস না পড়ে আরেক ক্লাসে উঠেছি। ১৯৭১ সালে আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি, ৭ মার্চের পর যখন স্কুল বন্ধ হয়ে গেল তারপর ’৭২ সালের জানুয়ারিতে সিক্স থেকে সেভেনে তুলে দেয়া হলো। আমার তো কমপিটিন্সিতে কোনো সমস্যা হয়নি।
আগামী ১৯ ডিসেম্বরের পর স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়েছে- এ বিষয়ে সচিব বলেন, সেটা বলেছি অন্যভাবে। বলেছি যে, এখনও আমাদের সংশোধিত ও অনুমোদিত দুটি লেসন প্ল্যান আছে।
‘করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং সরকার যদি মনে করে যে বাচ্চারা এখন নিরাপদ, তারা স্কুলে গেলে কোনো সমস্যা হবে না। সেই অবস্থা হলে আমরা স্কুল খোলার যদি সুযোগ পাই তাহলে আমাদের অনুমোদিত দুটি লেসন প্ল্যান আছে, অক্টোবর এবং নভেম্বর। সেটা যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে আমাদের লিমিট শেষ করার তারিখ ২০ ডিসেম্বর। একটা ৫২ দিন আরেকটা ৪০ দিন। যদি অক্টোবরে খুলতে পারি তাহলে এক রকম হবে, যদি অক্টোবরে খুলতে না পারি যদি নভেম্বরে খুলতে পারি তাহলে ৪০ দিন পাবো।’
সচিব বলেন, ইতিমধ্যে মার্চের ১৬ তারিখ পর্যন্ত পাঠ পরিকল্পনার আমরা ৩৫ শতাংশ শেষ করেছি। সারাদেশে এখন একই পাঠ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়। ঢাকা শহরে একটা স্কুলে যে পৃষ্ঠা পড়ানো হয়, সেটা পঞ্চগড় বা মাগুরা বা দিনাজপুর বা কক্সবাজারের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলেও একই পাঠ দেয়া হয়।
‘যদি স্কুল খোলা সম্ভব হয়, আমাদের সংশোধিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে হয়তো ২০ ডিসেম্বরের পরে শিক্ষকরা নিজ নিজ স্কুলে বাচ্চাদের মূল্যায়ন করতে পারবেন, পরীক্ষার কথা বলিনি। সেই মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে তুলে দেবে। যদি স্কুল খুলতে না পারি তাহলে… (অটো পাস)।’
প্রাথমিক সমাপনীর ক্ষেত্রে মূল্যায়ন কী হবে- প্রশ্নে সচিব বলেন, জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা কিন্তু হয়নি বা হবে না।
সমাপনী পরীক্ষা না হলে সনদে গ্রেডিংয়ের কী হবে- জানতে চাইলে সচিব বলেন, পরীক্ষা না হলে গ্রেডিং কোনো বিষয় নয়। তাকে পরবর্তী ক্লাসে অর্থাৎ ষষ্ঠ শ্রেণিতে উন্নীত করার জন্য তার স্কুলের হেডমাস্টার একটা সার্টিফিকেট দিয়ে দেবেন।