ক্যারিয়ারজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস রিও গ্র্যান্ডে ভ্যালিতে পড়তে গেছেন আশা বড়ুয়া। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত থেকে স্নাতক শেষ করা এই গ্রাজুয়েট বর্তমানে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে এপ্লাইড ম্যাথম্যাটিকস নিয়ে স্নাতকোত্তর করছেন।

 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আশিকুর রহমান গেছেন ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন মিসিসিপলে। সিজিপিএ ছিলো ২.৯১, জিআরই ৩১৭, টোফেল ৯৯।

 

সংসারে ৫ সন্তান। আশুতোষ নাথ সবার ছোট। তার আগের ১ ভাই ও ৩ বোনের কেউই উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। সবার ছোট আশুতোষের ওপর বাড়তি ভালোবাসা ছিল বড় ভাই পরিতোষ নাথের। জামা সেলাইয়ের কাজ করতেন তিনি। আয়ের একটা বড় অংশই ব্যয় করতেন আশুতোষের পড়ালেখার পেছনে।

উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজে রসায়ন বিভাগে স্নাতকে ভর্তি হন তিনি। তবু খরচ জোটানো কঠিন। শহরের চকবাজারে কম্পিউটারের দোকানে কাজ নেন তিনি। লেখা কম্পোজ করা ও গ্রাফিকসের টুকটাক কাজ—এ থেকে যা আয় হতো, তা দিয়ে নিজে চলতেন, বাড়িতেও কিছু পাঠাতেন। এমনি করে চলছিল দিন।

 

স্নাতকে ৩.১৬ সিজিপিএ নিয়ে পাস করেন। স্বপ্ন ডানা মেলে। ঠিক করলেন, ঢাকা কলেজে রসায়নে স্নাতকোত্তর করবেন। ভর্তি হয়ে তিন দিন ক্লাসও করেছিলেন। এই সময় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) রসায়নে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলো। ভাবলেন, একবার চেষ্টা করেই দেখি।

 

চেষ্টায় সুফল মিলল। ভাইভা দিয়ে বুয়েটে সুযোগ পেয়ে গেলেন আশুতোষ। ক্যাম্পাসটা অফিসের পাশে হওয়ায় পড়ালেখাতেও সুবিধা হয়েছিল। ৩.০৮ সিজিপিএ নিয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেন তিনি।

 

বুয়েটে পড়ার সময়ই মূলত গবেষণায় তার ঝোঁক তৈরি হয়েছিল। এ সময় আন্তর্জাতিক তিনটি জার্নালে তার গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। আশপাশের সবাইকে তখন দেখছেন বিশ্বের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে। আশুতোষ এবার নিজেকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন।

 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক করে আবেদন করা শুরু করেন বিশ্বের নানা প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বছরের মার্চের শেষ দিকে ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস বোস্টন তার কাগজপত্র যাচাইবাছাই করে কয়েক দফায় ভার্চ্যুয়াল ভাইভা নিয়ে পিএইচডি গবেষক হিসেবে আবেদন গ্রহণ করে। বর্তমানে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে অরগানিক কেমিস্ট্রির উপর পিএইচডি করছেন।

 

যা জানা জরুরি

আমেরিকায় স্কলারশিপ বা ফুল ফান্ডিংয়ে পড়াশোনা করা যায় তা সবার জানা। কিন্তু কীভাবে-কোথায় থেকে স্টুডেন্টকে স্কলারশিপ বা ফান্ডিং এর টাকা-পয়সা দেয়া হয় সে সম্পর্কে প্রশ্ন আছে অনেকের মনে।

 

স্কলারশিপ

বাংলাদেশে যেমন প্রাইমারি/হাইস্কুলে দেওয়া হয় বৃত্তি। আমেরিকায় এমন অনেক ইউনিভার্সিটি আছে যারা কিনা উচ্চশিক্ষার জন্য (PhD/Master’s) প্রোগ্রামে স্কলারশিপ বা বৃত্তি প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটির নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করতে হবে যেমন: (CGPA, GRE Score, IELTS/TOEFl Score) সহ আনুষঙ্গিক রিকোয়ারমেন্টগুলো ফুলফিল করা। ২.৫০ সিজিপিএ নিয়েও স্কলারশিপ পেতে দেখেছি পাবলিক, প্রাইভেট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে। সিজিপিএ খারাপ থাকলে IELTS, GRE-তে ভালো করে কভার দিতে পারবেন। একটা খারাপ থাকলে অন্যটা দিয়ে কভার করা যায়।

 

ইউনিভার্সিটিতে অ্যাডমিশন পেলে তারাই আপনাকে স্কলারশিপের জন্য জন্য বিবেচনা করবে। কিছু ক্ষেত্রে সরকার অথবা কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হয়। সিলেকশন কমিটি আপনাকে যোগ্য বিবেচনা করলে প্রদান করবে স্কলারশিপ। ফুল স্কলারশিপ পেলে আপনাকে দিতে হবে না কোন টিউশন ফি। এছাড়া আপনার থাকা, খাওয়া, বই-পত্র কেনা, ভ্রমণ ভাড়া, রিটার্ন বিমান ভাড়া, হেলথ ইনস্যুরেন্সসহ যাবতীয় খরচ বহন করবে স্কলারশিপ কতৃপক্ষ। আপনি নিয়মিত ক্লাস ও পড়াশোনায় মনোযোগী থাকবেন। স্কলারশিপ কতৃপক্ষ আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাবে। যাকে বলা হয় ফুলব্রাইট স্কলারশিপ।

 

ফান্ডিং

আমেরিকায় পড়াশোনার সবথেকে কার্যকরী উপায় ফান্ড ম্যানেজ করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় যারা পড়াশোনা করতে আসেন তাদের অধিকাংশই ফান্ডিং পেয়ে থাকে অ্যাসিস্ট্যান্টশিপের মাধ্যমে।

 

অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ

অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ এক প্রকার চাকরি। ইউনিভার্সিটি/ডিপার্টমেন্টের ল্যাবে কাজ করে অথবা প্রফেসরের গবেষণার কাজে সাহায্য করে পাওয়া যাবে বেতন। বেতনের সেই টাকা দিয়ে চালিয়ে যাবেন খরচাপাতি।

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য সুচিন্তিতভাবে আগানো দরকার বলে আমি মনে করি। তার কিছু নিচে উল্লেখ করলাম-

 

১. মোটামুটি সিজিপিএ;

 

২. ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়ানো ও IELTS/TOEFL-এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া; (সাধারণত IELTS score মাস্টার্স এর জন্য ৬.৫, কোন মডিউলে ৬ এর কম নয়);

 

৩. এনালিটিকেল দক্ষতা প্রমাণের জন্য GRE/GMAT এক্সাম শেষ করা একটা ভালো স্কোর সহ ৩১০+;

 

৪. যত বেশি সম্ভব ছোটো খাটো জব, প্রোজেক্ট এ কাজ করার অভিজ্ঞতা নেওয়া;

 

৫. সম্ভব হলে পাবলিকেশন করা;

 

৬. এক্সটা কারিকুলাম কাযক্রমে অংশগ্রহণ করা। বিভিন্ন ট্রেনিং, সেমিনার-সিম্পজিয়াম, লিডারশীপ প্রগ্রাম, সোশাল ওয়াক;

 

৭. কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারিক জ্ঞান বাড়ানো, কারণ তা আপনার উচ্চশিক্ষার জন্য লাগবেই;

 

৮. পড়াশোনা করা অবস্থাতেই বিভিন্ন দেশের উচ্চ শিক্ষার সুবিধা অসুবিধা সম্পকে খোজ রাখা।

 

৯. কমিউনিকেশন দক্ষতা বাড়ানো কারণ আপনাকে উচ্চ শিক্ষার বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রফেসর, ডিন ও কোঅডিনেটর এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে;

 

১০. সর্বোপরি সময়, শ্রম ও ধৈর্য ধরে লেগে থাকা কোন অবস্থাতেই নিরাশ না হওয়া।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে EducationsinBD.com এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নোটিশ দেখুন এখানে একসাথে National University Notice Board অনার্স /মার্স্টাস/ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রিমিয়াম সাজেশন পেতে ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। https://www.facebook.com/PremiumSuggestion আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন Facebook Group

Leave a Reply